জাতীয়

চ্যানেলে বিদেশি অনুষ্ঠান প্রচারে নিয়ম মানা হচ্ছে না : তথ্যমন্ত্রী

চ্যানেলে ডাবিং করা বিদেশি অনুষ্ঠান ও সিনেমা প্রচারের নিয়ম পুরোপুরি মানা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

Advertisement

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বিদেশি সিরিয়াল ও ডাবিকৃত বিদেশি অনুষ্ঠান সরকারের অনুমতি ছাড়া চালানো যায় না। ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন অনুযায়ী সরকারের অনুমোদন লাগে। এছাড়া প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিদেশি সিনেমা প্রচারের ক্ষেত্রে সেন্সর সনদপত্র গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটি অনেক ক্ষেত্রে পালন করা হচ্ছে না।’

আরও পড়ুন >> বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন বন্ধের প্রযুক্তি নেই বাংলাদেশে

Advertisement

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কোনো বিদেশি কলাকুশলীর বেসরকারি চ্যানেলে কাজ করার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেটিও অনেক সময় পুরোপুরি মানা হচ্ছে না বলে আমাদের কাছে খবর আছে।’

‘এগুলো যে ইচ্ছাকৃত তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞতাপ্রসূতও হচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করব’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বার্থে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সেই পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে বিশৃঙ্খলা ছিল সেখানে অনেকটা শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে যে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছিল, সেটি পুরোপুরি বন্ধ না হলেও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্যাবল অপারেটররা নিজস্ব চ্যানেলের মতো করে যে বিজ্ঞাপন প্রচার করত সেটি বন্ধ হয়েছে।’

‘সার্বিকভাবে এখানে যে বিশৃঙ্খলা ছিল, সেক্ষেত্রে অনেকটা শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা পরিপূর্ণভাবে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ও সহযোগিতায় এখানে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করতে পারব’ বলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

Advertisement

আরও পড়ুন >> সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি, আইন প্রয়োগ করেছে

তিনি আরও বলেন, ‘এসব বিষয়ে আলোচনা, কী অগ্রগতি হয়েছে সেটি, আরও কী করা প্রয়োজন সেই বিষয়গুলো আলোচনার জন্য সভায় বসেছি। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এক বছরেরও বেশি সময় আগে উৎক্ষেপণ হয়েছে; ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এখন শুধুমাত্র বিটিভি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার হচ্ছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে ফলাফল লক্ষ্য করেছি, বিশেষ করে বিটিভির ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়নি। সবাই অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দভাবে বিটিভি দেখতে পাচ্ছে, এ বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করব।’

ডেঙ্গু পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল অত্যন্ত ভালো প্রচারণা চালাচ্ছে- জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ প্রচারণা আরও কীভাবে কার্যকরভাবে করা যায়, সেগুলো আমরা আজ আলোচনা করব।’

অ্যাটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী মিডিয়া জগতে চলমান অনেক দিনের সমস্যা সমাধানে প্রাকটিক্যাল কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, তার ফলও আমরা পেতে শুরু করেছি। এজন্য তাকে ধন্যবাদ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে- টেলিভিশন ডিস্ট্রিবিউশনকে ডিজিটালাইজড করা। যাতে সাবস্ক্রাইবারেরা যে ফি দিয়ে থাকেন এর একটা অংশ বিটিভিসহ টেলিভিশনগুলো পেতে পারে। তাতে করে টেলিভিশনগুলোর বিজনেস মডেল যাতে সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপন নির্ভর হয়ে না পড়ে এবং টেলিভিশনের সঙ্গে জড়িত সকলকে যেন বেতন-ভাতা-ইনক্রিমেন্ট দিতে পারি।’

আরও পড়ুন >> ‘জি’ নেটওয়ার্কের সব চ্যানেল বাংলাদেশে বন্ধ

ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র, শান্তি-শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য অ্যাটকোসহ সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া একযোগে কাজ করতে চাই।’

সভায় তথ্য সচিব মো. আবদুল মালেক, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশিদ, বাংলা ভিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল হক, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জুবায়ের, কাজী মিডিয়া লিমিটেডের (দীপ্ত টিভি) পরিচালক কাজী জাহিন এস হাসান উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/এমএআর/পিআর