আন্তর্জাতিক

এবার উত্তরপূর্ব ভারতে ভাঙন আতঙ্ক

 ভারতীয় সংবিধানের ৩৭১ ধারা নিয়ে এবার উত্তরপূর্ব ভারতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কাশ্মীরিদের জন্য রক্ষাকবচ সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা এক ঝটকায় বিলুপ্ত করে দেয়ার পর উত্তরপূর্ব ভারতে এ আতঙ্ক শুরু হয়েছে।

Advertisement

উত্তরপূর্ব ভারতে সংবিধানের ৩৭১এ ও ৩৭১জি ধারা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সংরক্ষণের সুবিধা পান ভূমিপুত্ররা। এমনকি পার্বত্য এলাকায় জনজাতিদের জমির উপরে ও নিচে থাকা বন বা খনিজ সম্পদের উপরেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অধিকার স্বীকৃত। দিতে হয় না কোনো কর। ভারতীয় সংবিধানের ধর্মীয়, সামাজিক কোনো ধারা উত্তর পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে কার্যকর নয়। সেখানে দেশীয় আইন, ঐতিহ্য অনুযায়ী অনেক কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সম্পত্তি ও জমির হস্তান্তরও নিজস্ব নিয়মে চলে।

সংবিধানের ৩৬৮ ধারার ভিত্তিতে ৩৭১ নম্বর ধারায় নয়টি রাজ্যকে বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা ও অধিকার দেয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও অন্ধ্রপ্রদেশও রয়েছে সেই তালিকায়। ৩৭১বি ধারায় রয়েছে আসামের কথা। ওই ধারায় বর্ণিত অধিকার বলে রাজ্যপালকে আসামের জনজাতি এলাকার প্রতিনিধিদের নিয়ে বিধানসভার কমিটি গঠনের অধিকার দিতে পারেন রাষ্ট্রপতি। এ ছাড়াও আছে ২৪৪এ ধারা। ১৯৬৯ সালে যোগ করা এই ধারা অনুযায়ী, আসামকে স্বশাসিত পরিষদ গঠনের বিশেষ অধিকার দেয়া রয়েছে। ৩৭১ডি ও ই ধারায় অন্ধ্রপ্রদেশে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণসহ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে রাষ্ট্রপতির হাতে। আবার অরুণাচল প্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ অধিকার দেয়া রয়েছে রাজ্যপালকে। তিনি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত উল্টে দিতে পারেন ৩৭১এইচ ধারার ভিত্তিতে।

তাই কাশ্মীরের জন্য ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বিলোপ ঘোষণার পর উত্তরপূর্ব ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

Advertisement

মিজোরামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা লালথানহাওলা ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রেক্ষিতে বলেন, এ ঘটনা মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যের পক্ষে আতঙ্কের। কংগ্রেস মুখপাত্র লাল লিয়াংচুঙ্গা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ৩৭১এ ধারায় হাত পড়লে রুখে দাঁড়াবে মিজোরা। নিজেদের অধিকার রক্ষায় আমরা আত্মবলিদানেও প্রস্তুত। নাগাল্যান্ডের বৃহত্তম জনজাতি মঞ্চ নাগা হো হো-র সভাপতি চুবা ওঝুকুমের ৩৭০ ধারা নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে বলেছেন, আমরাও অধিকার হারানোর আশঙ্কায় ভুগছি। ভারত-নাগা শান্তি আলোচনা চলাকালীন কেন্দ্র নাগাদের অধিকারে হাত দিলে ফল খারাপ হবে।

এএইচ/এমকেএইচ