জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা-সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার আগেই সেখানকার মোবাইল পরিষেবা ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়। রোববার গভীর রাতে মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
Advertisement
রাত এগারোটার পরে শ্রীনগরের অধিকাংশ অঞ্চলের মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। মোবাইল ফোনের পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সোমবার ভোর ৪টার মধ্যে ল্যান্ডলাইন পরিষেবাও বন্ধ হয় শ্রীনগরের বেশ কিছু অঞ্চলে। কোনও প্রতিহিংসামূলক প্রতিক্রিয়া যেন তৈরি না হয় সেজন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অনেক কাশ্মীরিই জীবিকার তাগিদে বা পড়াশোনার জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছেন। মোবাইল পরিষেবা ও ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তারা কেউ কাশ্মীরে থাকা তাদের পরিবারের কারো সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে থাকা এক কাশ্মীরি নাগরিক জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টারও বেশি হয়ে গেছে। মায়ের সঙ্গে এখনও কথাই বলতে পারলাম না। ওরা সবাই বেঁচে আছে তো? সবাই ভালো আছে কি-না তাও জানি না।
Advertisement
ফোনে শেষ কথা হয়েছিল রোববার রাতে। তাদের বাড়ি কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুকের বাড়ি থেকে তাদের বাড়ি খুব বেশি দূরে নয়। ফলে এলাকায় সেনা, আধা-সেনাদের অবস্থান থাকছেই।
এর আগে মায়ের সঙ্গে যখন ওই যুবকের কথা হয় তখন তিনি জানিয়েছিলেন এখানকার সেনা আগের চায় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। তারপর থেকেই আর ফোনে পাওয়া যায়নি।
সোমবার সকাল থেকে বারবার ফোন করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। পুজার আগে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন পসরা নিয়ে। সঙ্গে ছিল স্ত্রী আর সন্তান। কিন্তু পরিবারের বাকিরা সবাই শ্রীনগরেই। ওই যুবক বলেন, যখন এসেছিলাম, সব ঠিকই ছিল। হঠাৎই অনেক আধা-সেনা পাঠানো হলো। অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দেয়া হলো।
তিনি বলেন, আমরা কাশ্মীরিরাতো কার্ফুতেই অভ্যস্ত। কমবেশি সবার বাড়িতে কিছু খাবার মজুত করা থাকে। কিন্তু টাকা তোলার উপায় নেই। এটিএম বন্ধ। এভাবে আর কতদিন? কবে আবার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারব? শুধু আমি নই, কাশ্মীরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পারছেন না কেউই।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি যা শুরু হয়েছে তাতে ভয় পাচ্ছি। মা-ভাই-বোন বেঁচে আছে কি নেই, তা পর্যন্ত যখন জানতে পারছি না। আতঙ্কের মধ্যেই দিন কাটছে। তবে কাশ্মীরের মানুষ বোধ হয় ভয় পেতে পেতেও ক্লান্ত।
টিটিএন/পিআর