জাতীয়

ভেঙে ফেলা হচ্ছে ধানমন্ডির রহস্যঘেরা জাহাজ বাড়ি

রাজধানীর সিটি কলেজের পাশ দিয়ে সীমান্ত স্কয়ার হয়ে সাত মসজিদ রোডে ধানমন্ডি লেকের পাশ ঘেষে খয়েরি রংয়ের ব্যতিক্রমী একটি ভবন চোখে পড়বে। অন্য সব ভবনের চেয়ে এই বাড়ির গঠন একেবারেই আলাদা। চলতি পথে কারো চোখ এই বাড়িটির দিকে পড়া মাত্রই তার চোখ থমকে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা রহস্যময় বাড়ি বলে পরিচিত ধানমন্ডি লেক ঘেঁষে থাকা এই জাহাজ বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।   ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম জানান, সোমবার বিকেলে বাড়িটির পাশ দিয়ে থানায় ফিরছিলাম। পথে দেখি বাড়িটি ভাঙা হচ্ছে। কারণ জানতে চাইলে আনোয়ার নামে এক শ্রমিক জানান, মালিক বাড়িটি বড় করে বানাবেন এ জন্য ভেঙে ফেলছেন। ওসি বলেন, বাড়িটি ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো ধারণা নেই। পুলিশ জানেও না কেন কারা এটা ভাঙছে। অনেকটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আদলে তৈরি করা বাড়িটিকে দেখে অনেকেই ভাবেন এটি কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। যারা নিয়মিত এই স্থানে যাওয়া-আসা করেন তারাও মনে করেন এটি একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তবে স্থানীয়রা জানান, আসলে বাড়িটি কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি বাসভবন। বাড়িটির মালিকের নাম বলতে পারলেও মালিক সম্পর্কে তাদের মনে রয়েছে আরেক রহস্য। এ যেন রহস্য বাড়ির রহস্যময় পুরুষ। অনেকেই জানেন না ওই বাড়িতে এখন কারা বাস করছেন। জাহাজ বাড়ি নামে খ্যাত ধানমন্ডির ৫/এ ৬০ নম্বর বাড়িটির গেটে ইংরেজি অক্ষরে লেখা আছে Chistia Palace, যার বাংলা উচ্চারণ চিশতিয়া প্যালেস। তবে অনেকেই এটিকে বলেন খিস্টিয়া প্যালেস।  স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এটার নাম জাহাজ বাড়ি না। বাড়িটার নাম চিশতিয়া প্যালেস। এই বাড়ির মালিকের নাম শেরে খাজা। তিনি আধ্যাত্মিক মানুষ ছিলেন। রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, শেরে খাজা সারা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি ছিলেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রীরা প্রায়ই তার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন এই বাড়িতে। ধারণা করা হয়, ১৯৯৩ সালে চিশতিয়া প্যালেসের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং তা শেষ হয় ১৯৯৪ সালে। পরবর্তীতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ধানমন্ডি লেক সংলগ্ন বাড়িটির কিছু অংশ ভেঙে পায়ে হাঁটা পথ তৈরি করে। এরপর বাড়ির মালিক জাহাজ আকৃতিতে বাড়িটির সীমানা প্রাচীর তৈরি করেন।জেইউ/এসআইএস/আরআইপি

Advertisement