ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে প্রথম থেকে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি ডেঙ্গু নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশেনের দুই মেয়রেরও সমালোচনা করেন।
Advertisement
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কে এম হেমায়েত উল্ল্যাহ্ আওরঙ্গজেব স্মৃতি সংসদ আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে ফখরুল ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী তিন মাস নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছেন’ বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘এখন সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে আমরা বাঁচব, কি বাঁচব না? ডেঙ্গু আক্রান্ত হব, কি হব না? আমাদের সাহেবরা যারা আমাদের মাথার ওপর ছুরি দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন, তারা তো বলেন, না সব কিছু ঠিক আছে, নিয়ন্ত্রণে আছে!’
তিনি বলেন, ‘জুন মাসে প্রথম যখন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল আক্রান্ত হন তখন ছিলেন ৩৬ জন। আজ পত্রিকায় আসছে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ১৫ হাজার ৭৬০ জন। জুন, জুলাই, আগাস্ট- এই তিন মাস নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছেন আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাহেব। তিনি কিছু জানেন না। কয়জন মারা গেছেন তা-ও বলতে পারেন না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের মেয়র যারা… এভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা জানি তারা কীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, ভোট দিতে কেউ যায়নি। তারা বললেন, এটা গুজব। অনেকে বলেছেন, এটা গুজব। এখনও তারা যে সমস্ত কথাবার্তা বলছেন, তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তাদের কোনো দায়িত্বশীলতা নেই।’
Advertisement
‘এ সমাজ টিকতে পারে না, সমাজ টিকবে না। রাষ্ট্রের বর্তমান যে অবস্থা এবং আজ তারা (সরকার) যে দিকে নিয়ে যাচ্ছে, এ রাষ্ট্র বিপন্ন হয়ে পড়েছে। একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। উন্নয়ন, কোথায় উন্নয়ন? যেখানে হাসপাতালে আমি আমার রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারি না। যেখানে মশক নিধনের ওষুধ আনতে পারি না, নিরাপদ সড়ক তৈরি করতে পারি না, সেখানে উন্নয়নটা কোথায়?’
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ভাবছে তারা চিরদিন ক্ষমতায় থেকে যাবে। পারবে না, কারণ খালেদা জিয়ার শক্তি অন্য জায়গায়। দেশনেত্রীর শক্তি এ দেশের সাধারণ মানুষ, তাকে সবাই ভালোবাসে। উনি বের হবেন এবং এ দেশের মানুষ তাকে বের করবেন, সংগ্রামের মধ্য দিয়েই বের করবেন। সুতরাং হতাশ হবেন না। আমরা বারবার এ সংকটে পড়েছি, বিপদে পড়েছি কিন্তু আবার ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছি।
‘জাতীয় রাজনীতিতে মেধাশূন্যরা আসছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ পরিবর্তন শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীজুড়েই হচ্ছে। কেন হচ্ছে সেটা বিশেষজ্ঞরা বলবেন, আমরা যেটুকু মনে করি, একটা মৌলিক পরিবর্তন ঘটছে গোটা রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে। আমার ধারণা, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলেই এ পরিবর্তনগুলো রাজনীতিতে আসছে।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলেরা স্লোগান দেয় লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই। আসলে সংগ্রাম ছাড়া তো আমরা কখনোই টিকব না। আজ যে সংগ্রাম, এ সংগ্রাম শুধু বিএনপির সংগ্রাম নয়। এ সংগ্রাম দেশকে-জাতিকে রক্ষা করার লড়াই। এ সংগ্রাম, এ লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।
Advertisement
আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মোহাম্মদ জাফর প্রমুখ।
কেএইচ/এমএআর/এমকেএইচ