দেশজুড়ে

ওদের দেখার আর কেউ থাকলো না

মা মমতাময়ী আর বাবা বটবৃক্ষের ছায়া। এ মমতা এবং ছায়ার বন্ধনে বেড়ে উঠে সন্তান। একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের জন্য বন্ধন ছিন্ন হয়ে এতিম হয়ে গেল শিশু জুই, বিজয় এবং তায়েবা। ওরা আর কোনো দিন মায়ের আঁচলে মুখ লুকাতে পারবে না, পারবে না বাবার বুকে মাথা রাখতে। হতভাগ্য এ শিশুদের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের চান্দুলিয়া গ্রামে।

Advertisement

রোববার সকালে মা তাসলিমা, বাবা জাহাঙ্গীর তাদের শিশু পুত্র বিজয়কে ডাক্তার দেখাতে মির্জাপুর উপজেলা সদরে নিয়ে আসেন। ডাক্তার দেখিয়ে তারা একটি ব্যাটারি চালিত রিকশাযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের (পুরাতন এলাকা) কদিম দেওহাটা নামক স্থানে গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইলগামী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এতে তাসলিমা ঘটনাস্থলেই এবং জাহাঙ্গীর মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে মারা যান। এভাবেই দুই যন্ত্র দানব কর্তৃক সংঘটিত সংঘর্ষে জুই, বিজয় এবং তায়েবা এতিম হয়ে যায়। এদের মধ্যে জুই তৃতীয় শ্রেণিতে এবং বিজয় নার্সারিতে পড়ে।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান জানান, শিশু তিনটি আজ থেকে এতিম হয়ে গেল। ওদের দেখার আর কেউ থাকলো না। একই কথা জানান, এতিম শিশু তিনটির মামা গোহাইলবাড়ি গ্রামের আলামিন ও নিহত জাহাঙ্গীরের ভাতিজা আব্দুর রাজ্জাকসহ পাড়া প্রতিবেশীরাও। তাদের সবারই একই প্রশ্ন এ এতিম শিশু তিনটির দায়িত্ব এখন কে নেবে?

এ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কদিম দেওহাটা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান জানান, ঘটনার সময় ওই দম্পতির কোলে থাকা শিশু বিজয়কে পাকা সড়কের পাশে মাটিতে ছিটকে পড়তে এবং বাসটি রাস্তায় থেমে পড়তে দেখলাম। পরে বাসের যাত্রী এবং স্থানীয় লোকজন বাসটি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বাসের নিচ থেকে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

Advertisement

মির্জাপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোশারফ হোসেন জানান, আসলে বাস না ব্যাটারি চালিত রিকশা কে বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলো তা বলা মুশকিল। তবে উভয়েই যে বেপরোয়া ছিল তা দুর্ঘটনার প্রকৃতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

এস এম এরশাদ/এমএএস/এমএস