মাত্র তিনদিন আগেই ঘটা করে ঢাকা ডাইনামাইটস ছেড়ে রংপুর রাইডার্সে নাম লিখিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার এবং সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপের সেরা পারফরমার সাকিব আল হাসান। বেশ কয়েক বছর ঢাকা ডাইনামাইটসে খেলার পর সাকিবের হঠাৎ করে রংপুরে নাম লেখানোর কারণে জ্বল্পনা তুঙ্গে উঠে গেছে যে, আগামী বিপিএল নিশ্চিত আরও বেশি জমজমাট এবং আরও বেশি আকর্ষণীয় হতে যাচ্ছে।
Advertisement
বিপিএল প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগেই শীর্ষ পর্যায়ের খেলোয়াড়দের দলবদল নিশ্চিত সমর্থকদের মনেও ভিন্ন মাত্রা তৈরি করে। আকর্ষণ কিংবা উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। সাকিব রংপুরে, তামিম ইকবাল কুমল্লিা ছেড়ে খুলনা টাইটান্সে কিংবা চট্টগ্রাম ছেড়ে মুশফিকের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে নাম লেখানোর কারণে আগামী উন্মাদনাও বাড়িয়ে দিচ্ছিল বিপিএল।
কিন্তু আজ হঠাৎ করেই বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল যে ঘোষণা দিলো, তাতে নাটকীয়তা আছে। তবে, অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপেও পড়ে গেলো বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় ফ্রাঞ্চাইজি লিগটি।
নিশ্চিত বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল নিয়ম-নীতি মেনেই ঘোষণা দিয়েছে, এতদিন বিপিএল ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মালিকানায় যারা ছিল তাদের সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী'ই চুক্তির মেয়াদ শেষ। অথ্যাৎ, এতদিন যারা ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মালিক ছিল, এখন আর তারা মালিক নন। মালিক হতে হলে নতুন করে চুক্তি করতে হবে, নিবন্ধন করতে হবে।
Advertisement
শুধু তাই নয়, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল আজ স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছে, নতুন চুক্তি না হওয়া কিংবা নতুন মালিকানা না নেয়া পর্যন্ত কোনো দলই নতুন করে খেলোয়াড় বেচাে-কেনা করতে পারবে না। এমনকি আগামী বিপিএলে যে সব ফ্রাঞ্চাইজি অংশ নিতে পারবে তাদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন করে খেলোয়াড় ড্রাফটের আয়োজন করবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। পূর্বের ন্যায়, কোনো দলই এখন আর কোনো খেলোয়াড়কে রিটেইন করতে পারবে না।
অর্থ্যাৎ, সম্পূর্ণ নতুন একটি বিপিএল শুরু হবে সপ্তম আসর থেকে। যেখানে দলগুলো থাকবে নতুন, মালিকানা নতুন এবং তারা দলও গঠন করবে নতুন করে। ইতিমধ্যে কেউ যদি খেলোয়াড় অদল-বদল করে থাকে, তাহলে সেগুলোর সবই অবৈধ। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়ে দিয়েছে, এসব অবৈধ খেলোয়াড় বেচা-কেনাকে তারা অনুমোদন দেবে না। মালিকানা চুক্তি নতুন করে করার পরই কেবল বিসিবির অনুমোদন সাপেক্ষে খেলোয়াড় কিনতে পারবে। দল সাজাতে পারবে।
বিপিএল গভর্নিং কমিটির শীর্ষ কর্মকর্তা মাহবুব আনাম আজ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেন, আগে বিপিএল কর্তৃপক্ষের সাথে আর্থিক চুক্তি, দল নিবন্ধন, তারপরই না দল সাজানো বা ক্রিকেটার সংগ্রহের কাজ। তিনি বলেন, ‘আপনার সঙ্গে যদি এগ্রিমেন্ট না থাকে এবং তার নিয়মগুলো যদি আউটলাইন না থাকে আপনি যা কিছুই করেন সেটা কিন্তু গ্রহণযোগ্যতার কোনো অবস্থান নেই।’
মাহবুব আনাম বোঝানোর চেষ্টা করেন, যেহেতু বোর্ড ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে দুটি নতুন দলের মালিকানা স্বত্ত্বের আবেদন চাওয়া হয়েছে, তাই এ মুহূর্তে কোন দলের খেলোয়াড় রিটেইন করার বিষয়টিও চূড়ান্ত নয়। যেমন চূড়ান্ত নয়, নতুন করে ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর কাজও।
Advertisement
এ কারণে মাহবুব আনাম বলেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি যে অকশনে দিয়েছে তাদের তো কিছুই নেই। সে কাকে রিটেইন করবে।’
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের নতুন এই ঘোষণায় এই মুহূর্তে রংপুর রাইডার্সেরই কোনো অস্তিত্ব নেই। যার অস্তিত্বই নেই, তারা কিভাবে খেলোয়াড় ধারণ করবে? অথচ এরই মধ্যে খেলোয়াড় বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত বিসিবির?
মাহবুব আনাম বলেন, ‘এ নিয়ে চিঠিও দেয়ার দরকার নেই, আমলে নেয়ারও দরকার নেই। নিয়মের মধ্যে যেতে হবে। কারও জন্য তো কোনো স্পেশেফিক নিয়ম তৈরি করা যাবে না। যদি ফ্রেশ সাইকেল তৈরি হয় এবং বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল যদি ফ্রেশলি শুরু করে কোনো প্লেয়ার কারও জন্য অ্যাভেইলেভল থাকবে না। বিপিএলের চুক্তির ৩.১ অনুযায়ী প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে আগে অনুমোদন করাতে হবে।’
তাহলে যে কেউ কেউ এরই মধ্যে শীর্ষ তারকাদের দলে ভিড়িয়ে ফেলেছেন। চুক্তিও করে ফেলেছেন। সেগুলোর কি হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আনাম বলেন, ‘যারা এসব কাজ করছেন তারা যদি নিজেদের অবস্থান না জানেন, সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় নেই। চুক্তি যেটি করেছে তার কোনো ভ্যালিডিটি নাই। যেটা ভ্যালিট কন্ট্রাক্ট না সেটাকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করার আমি কোনো যৌক্তিকতাই দেখি না।’
এআরবি/আইএইচএস/এমএস