রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনতে এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এজন্য বেনাপোল স্থলবন্দরে ‘কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। এতে খরচ ধরা হয়েছে ২শ ৮৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
Advertisement
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেটি এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বেনাপোল স্থলবন্দর। যার শুরু ৪টি টিনশেড দিয়ে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে আজ এ বন্দরটি হয়ে উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর। স্বীকৃতি লাভ করেছে আন্তর্জাতিকভাবে।
এ বন্দর ব্যবহার করে স্থলপথে প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি-রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। প্রতি বছর এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানির পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। যা থেকে বছরে প্রত্যক্ষভাবে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসে। ২০০২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দর।
Advertisement
প্রতিদিন প্রায় ৪শ-৫শ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক এবং ৫শ-৬শ বাংলাদেশি ট্রাক বন্দরে আসে। টার্মিনালটি নির্মাণ করা হলে প্রায় এক হাজার ২৫০টি যানবাহন পার্কিং করা সম্ভব হবে।
প্রকল্পের আওতায় ২৯ দশমিক ১০ একর জমি অধিগ্রহণ, ২ লাখ ৪৫৬ হাজার ৯৭ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ২ হাজার ১০০ মিটার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, ৬ হাজার বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, এক লাখ ৪৭ হাজার বর্গমিটার পার্কিং ইয়ার্ড, এক হাজার ৭৪৭ বর্গমিটার ভবন নির্মাণ, দুইটি মেইন গেট, দুইটি গেস্ট হাউস ও সিকিউরিটি সিস্টেম, চারটি ওয়াচ টাওয়ার এবং এক হাজার ৬৫০ বর্গমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বেনাপোল স্থলবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশে আগত পণ্যবাহী গাড়ি সংরক্ষণ ও আমদানি-রফতানি কাজে গতিশীলতা আসবে। বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় বাড়বে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সুজন বলেন, সম্ভাবনাময় বন্দর বেনাপোল। দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। সরকার যদি প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন করে তাহলে বর্তমানে যে রাজস্ব আদায় হয় তখন তার দ্বিগুন হবে।
Advertisement
এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদিত হলে দ্রুত বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বন্দরের যানজট কমে আসবে। পাশাপাশি আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গতিশীলতা বাড়বে।
জামাল হোসেন/এফএ/এমএস