একা জীবনযাপন করছে এমন অনেক উদাহরণ হয়তো আপনি দিতে পারবেন, কিন্তু সেই বেঁচে থাকা আদতে প্রাণহীন। বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক হেলেন কেলার বলেছেন, ‘একা আলোয় হাঁটার থেকে বন্ধুর সঙ্গে অন্ধকারে হাঁটা অনেক ভালো’। বন্ধুত্বের গুরুত্ব জীবনে ঠিক কতটা তা যে কারোই অনুভব করার কথা। আপনি ঘুরে বেড়ান, বাইরে কোথাও খেতে যান কিংবা সিনেমাই দেখতে যান, পাশে একজন বন্ধু না থাকলে মুহূর্তেই সব পানসে মনে হবে। আপনার সাদাকালো পৃথিবীকে রাঙাতে বন্ধুই কিন্তু রঙিন চশমা হিসেবে কাজ করে!
Advertisement
কেন এই বন্ধু দিবস: ভালোবাসা না থাকলে বন্ধুত্ব হয় না, এটা তো জানা কথা। এখন বলুন তো, আপনি আপনার বন্ধুকে কতটা ভালোবাসেন? তার জন্য নিজের জীবনটা বিলিয়ে দিতে পারবেন? বন্ধু দিবসের শুরুটা কিন্তু এখানেই। ইতিহাস বলছে, ১৯৩৫ সালে আমেরিকার সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। তার প্রতিবাদে পরদিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এর পরপরই বন্ধুত্বের প্রতি সম্মান জানানোর লক্ষ্যেই আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালে আগস্টের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে একটা কথা, বন্ধুর জন্য জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকুন, সেইসঙ্গে বাঁচিয়ে রাখুন বন্ধুত্বকেও। হুটহাট নিজের জীবনটা দিয়ে দেয়ার অর্থ নেই।
বন্ধুকে ভালোবেসে: পৃথিবীর অসংখ্য মানুষের মধ্য থেকে বন্ধু শুধু সেইজনই হয়, যার সঙ্গে আপনার মনের অনেকটাই মিল। আপনি না বললেও যে আপনার মনের কথাগুলো বুঝতে পারে। প্রেম একতরফা হয়, ভালোবাসাও একতরফা হয়, বন্ধুত্ব কখনোই এক তরফা হয় না। তাই খেয়াল করুন, বন্ধু হিসেবে আপনি কতটা উপযুক্ত। সুখে-দুখে তার পাশে আপনি কতটা থাকতে পারেন। কতটা ভরসা দিয়ে তার হাত দুটি ধরতে পারেন।
বন্ধু কারা হতে পারে: বন্ধু কে হতে পারে আর কে হতে পারে না, এর নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। বন্ধু হতে পারে যে কেউ। নয়তো উঁচু দালানবাড়ির ছোট্ট খোকার সঙ্গে গলির মোড়ের বৃদ্ধ সবজি বিক্রেতার বন্ধুত্ব হতো না। বন্ধুত্ব হতো না কাবুলিওয়ালার সঙ্গে মিনির। বন্ধুত্ব হতে পারে বাবা, মা, স্বামী, স্ত্রী, ভাই, বোন- যে কারও সঙ্গেই। যার সঙ্গে কথা বলে হৃদয়ে প্রশান্তি মেলে, আপনার কষ্টে যার চোখে পানি আসে, সেইতো বন্ধু! তবে একটু সতর্কতাও মানতে হবে। বন্ধুর রূপ ধরে আসলে সে আপনার শত্রু কি না, কিংবা তার সঙ্গে মিশলে অপকারটাই বেশি কি না সেদিকেও নজর রাখতে হবে। মনে রাখবেন, একজন খারাপ বন্ধুই আপনার জীবন ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট।
Advertisement
বন্ধুত্ব থেকে কি প্রেম হয়: এটি খুব কমন একটি প্রশ্ন। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম সম্ভব কি না? অনেক সময় বিপরীত লিঙ্গের দুটি মানুষের বন্ধনের শুরুটা হয় বন্ধুত্ব দিয়ে। একটা সময় তা প্রেম এবং পরবর্তীতে প্রেম থেকে পরিণয়ে গড়ায়। এখন কথা হলো, এরকম দু’জন বন্ধু আদৌ সম্পর্কটিকে প্রেমে রূপ দেবে কি না, এটা একান্তই তাদের রুচি ও অভিমতের ব্যাপার। সেখানে আর কারও কিছু বলার সুযোগ নেই। তাই বন্ধুত্ব থেকে প্রেম হবে কি না তা আগে থেকে বলে দেয়া সম্ভব নয়। তবে যদি জানতে চান, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম হতে পারে কি না? তবে উত্তর হলো, অবশ্যই হতে পারে। আর সেই প্রেমে বোঝাপড়াটা বরং একটু বেশিই সুন্দর থাকে।
এইচএন/পিআর