ফরিদপুরের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১৪০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
Advertisement
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় সাধারণত স্যালাইন আর প্যারাসিটামল দেয়া হলেও সংকটের কারণে রোগীদের প্রয়োজনীয় স্যালাইন দিতে পারছে না ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ফমেক) কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, স্যালাইন নেই।
শনিবার সরেজমিনে ফমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, স্যালাইন সংকটের কারণে হাসপাতাল থেকে বেশিরভাগ রোগীকে স্যালাইন দেয়া হয় না। অধিকাংশ রোগীর স্বজনরা বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনছেন।
ফমেকের পুরুষ ওয়ার্ডের (ইউনিট-১) রোগী আরাফাত (২৮) জানান, হাসপাতাল থেকে স্যালাইন দেয়া হয়নি। আমাদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হয়েছে। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি জেলার বোয়ালমারীর বনচাকী গ্রামের দরিদ্র লাকি বেগমও (২৩) একই অভিযোগ করেছেন।
Advertisement
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে ১০৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করে ফমেক পরিচালক আরও বলেন, ডেঙ্গুসহ নানা রোগীর জন্য ৫০০ বেডের এ হাসপাতালে বর্তমান সংকট মোকাবিলায় জরুরিভাবে ১০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন দরকার। একজন মাত্র টেকনিশিয়ান দিয়ে রাত দিন চলছে রক্ত পরীক্ষার কাজ। রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা।
তিনি আরও বলেন, পাবলিক হেলথের কাছ থেকে প্রয়োজনের তুলনায় আমরা অর্ধেক পরিমাণ স্যালাইনও পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে রোগীদের স্যালাইন দেব।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৮ জন ও ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল ও প্রাইভেট হাসপাতালে ৩২ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।
Advertisement
স্যালাইন সংকটের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেই স্যালাইন সংকট রয়েছে। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে নিয়ে অনেকে রোগী সামাল দিচ্ছেন। তবে মুখে খাবার স্যালাইন দিয়ে অনেকটা প্রয়োজন মেটানো যায়।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্যালাইন সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা প্রেরণ করে যত দ্রুত সম্ভব সংকট মোকাবিলা করা হবে।
ঢাকার ইনিস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের পরিচালক ডা. সুলতান মাহমুদ সামসুজ্জামান বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারাদেশে একযোগে প্রচুর স্যালাইনের চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন ঘাটতি থাকায় চাহিদা মাফিক সবটুকু প্রয়োজন একসঙ্গে সামাল দেয়া যাচ্ছে না। তবে যতটুকু সম্ভব দ্রুত ফমেক হাসপাতালে স্যালাইন সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হবে।
বি কে সিকদার সজল/এএম/এমকেএইচ