ঢাকাসহ দেশব্যাপী ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ। এখন পর্যন্ত ১৪ জন মারা গেছেন বলে সরকারি হিসাব বলছে। তবে বেসরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে অনেকে দাবি করছেন।
Advertisement
এই ডেঙ্গু নিয়ে সবুজ আন্দোলন নামে পরিবেশবাদী সংগঠনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাই একে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে সরকারিভাবে ঘোষণা করা দরকার।
তিনি বলেন, দলমত নির্বিশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো এডিস মশা ও মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করার জন্য যুদ্ধে নেমে পড়া উচিত।
শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সবুজ আন্দোলনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
‘আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাপ্পি সরদার। এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, নাট্য অভিনেতা রাসেল, সবুজ আন্দোলন পরিচালনা পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক এম. মিজানুর রহমান, সংগঠনের কার্যকরী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুবক্কর সিদ্দিকসহ আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপ্পি সরদার। তিনি তার সংগঠনের সব কর্মীকে আজ থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ করার আহ্বান জানান। বলেন, সরকার চাইলে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
সিটি কর্পোরেশনকে সতর্ক করে তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহায় ১ কোটি ১০ লাখ পশুর আগমন ঘটবে। এ থেকে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টন বর্জ্যের সৃষ্টি হবে। যদি এই বর্জ্য দ্রুত সময়ে অপসারণ করা না যায়, তাহলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, আমি নিজেই এখন আশঙ্কা প্রকাশ করছি যে, আমি নিজেই হয়তো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারি। তাই সবার প্রতি আহ্বান রেখে বলছি, আগে নিজে বাঁচুন এবং অন্যেকে বাঁচাতে সহায়তা করুন। গত ডিসেম্বর মাস থেকে যদি সিটি কর্পোরেশন ও সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করত, তাহলে আজকে হয়ত এ মহামারি দেখতে হতো না।
Advertisement
ডেঙ্গু মোকাবেলার জন্য তার নিজের ফর্মূলা যথেষ্ট, দাবি করে তিনি বলেন, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন, সামাজিক দায়বদ্ধতা, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও যথাযথ ওষুধ প্রয়োগ করলেই ডেঙ্গু মোকাবেলা করা সম্ভব হতো। এ সময় তিনি একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করেন।
মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এতদিন গর্ব করতাম। কিন্তু আজ লজ্জিত হচ্ছি। যখন দেখছি, ভারত থেকে মশার বিশেষজ্ঞ আনা হচ্ছে। কোনো সরকারই এ দেশের গবেষণায় অর্থ ব্যয় করেনি এবং গবেষকদের মূল্যায়নও করেনি।
তিনি বলেন, মশা মারার ওষুধ আনতে নানা গল্প বলা হচ্ছে। অথচ মশা মারার কার্যকর ওষুধ কয়েল প্রস্তুত করার নামে অবাধে আমদানি করা কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি খোলা বাজারে এসব ওষুধ বিক্রি করে থাকেন।
তিনি দাবি করে বলেন, আজ এ অবস্থার জন্য কৃষি অধিদফতরের বালাইনাশক ও রোগতত্ত্ব বিভাগ এবং আইসিডিআরবি অনেকাংশে দায়ী। কারণ, মশার ওষুধ আমদানি, লাইসেন্স প্রদান ও মশা মারার কার্যকর কৌশল এই প্রতিষ্ঠানগুলো করে থাকে।
জেডএ/এমকেএইচ