দেশজুড়ে

এডিস মশা সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে কিশোর

বাড়িতে টিউবওয়েলে গোসল করার সময় কিশোর সাজেদুলের হাতের ওপরে বসে একটি মশা। মশাটি তাকে কামড় দেয়ার আগেই সে থাবা দিয়ে মেরে ফেলে। বড় বড় পা ও শরীরের গঠন ভিন্ন হওয়ায় এডিস মশা বলে সন্দেহ হয় তার। মশা সঙ্গে নিয়েই মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসে সাজেদুল। তার রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু এনএস-১ পজেটিভ পান চিকিৎসকরা।

Advertisement

ডেঙ্গু আক্রান্ত সাজেদুল ইসলাম (১৬) গাংনী উপজেলা শহরের একটি ফার্মেসির কর্মচারী। তার বাড়ি জুগিন্দা গ্রামে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. সজিব উদ্দিন স্বাধীন বলেন, যে এডিস মশাটি সে মেরেছে সেটি তাকে কামড় দেয়নি। তার বাড়ির আশপাশে এডিস মশা রয়েছে। কয়েকদিন আগেই তাকে কামড় দিয়েছে। কারণ এডিস মশা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া হয় না। কয়েক দিন সময় লাগে।

এদিকে গত ২৯ জুলাই গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আম্বিয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূর প্রথম ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরের দিন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনজন ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও তিনজন রোগী ভর্তি হন। শুক্রবার সাজেদুল ইসলামসহ আরও এক যুবক ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে মেহেরপুর জেলায় এখন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আটজন। এদের মধ্যে ছয়জন মেহেরপুর ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি, একজন কুষ্টিয়া এবং একজন ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন।

Advertisement

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আবু সাঈদ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। তার বাড়ি গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামে। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। ঢাকা থেকে জ্বর অনুভূত হলে বাড়ি ফিরে হাসপাতালে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু এনএস-১ ধরা পড়ে তার।

এ বিষয়ে ডা. সজিব উদ্দিন স্বাধীন বলেন, তাকে বাড়তি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। চিকিৎসা চলছে। আশা করছি সে সুস্থ হয়ে যাবে।

এদিকে ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের মাঝে এক প্রকার ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। কারো শরীরে জ্বর অনুভূত হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন ল্যাবে।

মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে ডেঙ্গু জন্মাতে পারে এমন জায়গাগুলো ধ্বংস করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অযথা পরীক্ষা না করার পরামর্শ দেন তিনি।

Advertisement

আসিফ ইকবাল/আরএআর/এমএস