বাংলাদেশে যখন ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ ভয়াবহ মাত্রায় বেড়ে চলেছে, তখন প্রতিবেশি বেশ কয়েকটি দেশ এটি নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। কিন্তু তাদের এই সফলতার পেছনে রয়েছে বেশ সাজানো পরিকল্পনা এবং বছরজুড়ে বাস্তবায়ন করে আসা সমন্বিত উদ্যোগ।
Advertisement
সিঙ্গাপুরে চলতি বছরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে মাত্র ৯ জন। কিন্তু ৫০ বছর আগে স্বাধীন হওয়ার আগে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছিল। স্বাধীন হওয়ার পরও দেশটিতে এই রোগের বিস্তার ও প্রকোপ মহামারি আকার ধারণ করেছিল। দেশটির অধিকাংশ মানুষই একবার না একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন; এমনকি অনেকে একাধিকবারও।
আধুনিক ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে এই মশাবাহিত রোগটির বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে। একজন মানুষের শরীর থেকে অনেক মানুষের মাঝে এই ভাইরাস জ্বর ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু একটি মশা অল্প কয়েকজনের শরীরে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
আরও পড়ুন : পর পুরুষে আসক্তি, মশা নিধনের ওধুষ খাইয়ে স্ত্রীকে হত্যা
Advertisement
কয়েক দশক পর সিঙ্গাপুর এখন উন্নত। বিশ্বের সর্বোত্তম ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ জাতীয় কর্মসূচি হাতে নেয় সিঙ্গাপুর। এই কর্মসূচির আওতায় মশা জন্মানোর স্থান খুঁজে বের করা হয়। বাড়ি বাড়ি ঘুরে মানুষকে সচেতন করা হয়। প্রত্যেক এলাকায় এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য আলাদা আলাদা দল গঠন করেন কর্তৃপক্ষ।
সিঙ্গাপুরের ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চমৎকার সফলতা পায়। খুব কম মানুষই এই মশাবাহিত ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়। ফলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়াও কঠিন হয়ে পড়ে। আক্রান্তের সংখ্যা কমে যায়।
এমনকি নতুন প্রজন্মের সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের অধিকাংশই অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে, তারা কখনই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। কারণ বছর জুড়ে চলমান এই কর্মসূচির মাধ্যমে মশা নিধন করা হয়। মানুষকে সচেতন করতে প্রত্যেক এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার, বিলবোর্ডে বাসা-বাড়ি ও আশপাশের এলাকা কীভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে; সেব্যাপারে সচিত্র পরামর্শ দেয়া হয়।
তবে চলতি বছরের শুরু থেকে দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ৯ জন। দেশটির জাতীয় পরিবেশ সংস্থা বলছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৮ হাজার ৯৪৬ জনে পৌঁছেছে। গত বছরের একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের চেয়ে এবারের এই সংখ্যা প্রায় পাঁচগুণ বেশি।
Advertisement
সূত্র : চ্যানেল নিউজ এশিয়া, নিউ স্ট্রেইট টাইমস।
এসআইএস/এমএস