শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১১ জন বলা হলেও স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলছেন, সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা মাত্র ১৪ জন!
Advertisement
তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে মনে করি। মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন ভালো কাজ করছে। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে দেশবাসীকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। সবাই স্ব স্ব জায়গা থেকে কাজ করলে মশা কমে যাবে। আর মশা কমে গেলে ডেঙ্গু পরিস্থিতিও ভালো হয়ে যাবে।
শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডেঙ্গু সেল পরিদর্শন ও রোগীদের খোঁজ-খবর নেয়ার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল তথ্যমতে, ডেঙ্গুর কারণে মারা গেছেন ১৪ জন। সেটা হয়তো দিনদিন বাড়তে পারে। মৃত্যু তো অনেক কারণেই হয়। শুধু তো ডেঙ্গুর কারণে হয় না। আমাদের হিসাব মতে ডেঙ্গুর কারণে মৃত ১৪ জন।
Advertisement
ঢাকা মেডিকেলে ১১ জন, বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ২ জন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তিনজনসহ ৪০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে। সেখানে সারাদেশে কী করে মৃতের সংখ্যা ১৪ জন হয়? সরকারি হাসপাতালগুলো কি তবে ভুল তথ্য দিচ্ছে? এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যসচিব বলেন, সারাদেশে মৃতের সংখ্যা বেশি এমনটা নয়। একই তথ্য একাধিকবার আসতে পারে। সারাদেশের মৃত্যুর তথ্য ও ব্লাড স্যাম্পলের তথ্য আসে। সে অনুযায়ী মৃত্যুর সংখ্যা ১৪ জনের বেশি নয়।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১৪ জনের তথ্য আজকের নয়। আমরা আজ আরও ৫টা হাসপাতালে যাব। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে মৃতের সর্বশেষ তথ্য জানাব।
মন্ত্রী বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। নেতিবাচকভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সেবার বিষয়। সেদিকেই আমাদের মনোযোগ। অনুরোধ করব, নেতিবাচক নয়, আতঙ্ক নয়। সকলে মিলে কাজ করছি, যাতে করে মানুষ ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পায়, যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে যেন মানুষকে সুস্থ রাখা যায়।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ২০০ শয্যা বাড়ানো হয়েছে। এখানে দুজন মারা গেছেন। তারা দুজনই অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। অন্য বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেয়ার পর এখানে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে মারা গেছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করছি। শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটকে এক হাজার শয্যায় উত্তীর্ণ করা হচ্ছে। আমরা প্রস্তুত আছি, রোগী যদি বাড়ে। তবে মনে হয় না সেটার প্রয়োজন হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের চিন্তা ঈদের সময়টা নিয়ে। সে জন্য ইতোমধ্যে ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ডাক্তাররা দিনরাত কাজ করছেন, রোজ ব্রিফ করা হচ্ছে, মনিটরিং করা হচ্ছে। আমরা সকলে মিলে কাজ করছি। কিট, স্যালাইন, ডাক্তার, নার্সের অভাব নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। তিনি সবকিছু জানার চেষ্টা করছেন। তিনি বলছেন, কোনো কিছুর যেন অভাব না হয়। রি-এজেন্টের কিছু অভাব ছিল। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। কিছু টেস্টিং কিটের কিছু অভাব দেখা দিয়েছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ডিজি ড্রাগকে বলেছি। তারা ৫০ লাখ কিটের অনুমোদন দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুই লাখ কিট চলে আসছে। সমস্ত জেলার সঙ্গে কানেকটেড হয়ে কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৬ থেকে ১৭ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল। গত ৩/৪ দিনে এই রেশিও বিরাজ করছে। মশা তো ঘরের ভেতরে আছে। মশা তাড়ানোর জন্য তো ঘরে যারা থাকেন তাদেরও সচেতনতা দরকার। সরকারের পাশে দলীয়ভাবেও মশকনিধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং পেনিক হবার কোনো কারণ নাই।
জেইউ/বিএ/এমকেএইচ