ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় সংকট ও দুর্যোগ’ ঘোষণা দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)।
Advertisement
শুক্রবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
নেতৃদ্বয় বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ব্যাপক হারে বাড়লেও এডিস মশা নিধনে দৃশ্যমান কিছু পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মশা মারার ওষুধ অকার্যকর। কার্যকর ওষুধ জরুরিভিত্তিতে আনা হচ্ছে না। সরকার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ।
তারা বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার সরকারের সার্বিক গাফিলতি ও দুর্নীতির ফল। ডেঙ্গু যে এ বছর বাড়বে, সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরেরই এ পূর্বাভাস ছিল। ফলে আগেই ব্যবস্থা না নেয়াটা বিশাল দায়িত্বহীনতার পরিচয়। এরপর কীটনাশক ও ওষুধ ক্রয়ে দুর্নীতি ঘটেছে। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যাওয়ার পরই, অনেক প্রাণহানি ও জনবিক্ষোভের পর সরকারের টনক নড়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশবাসীকে এমন দুর্যোগের ভেতরে রেখে সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। অন্য যেকোনো সভ্য দেশে এমন পরিস্থিতিতে কর্তব্যে অবহেলা, দুনীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং অযোগ্যতার দায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও মেয়রদের পদত্যাগ করতে হতো।
Advertisement
‘যেহেতু ডেঙ্গুর ব্যাপকতা বেড়েছে, ডেঙ্গু ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেহেতু ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রলম্বিত হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যেহেতু আগাম সতর্কতার পরও ডেঙ্গু মোকাবিলার প্রস্তুতি ও সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে, তাই শুধু ঢাকার দুইটি সিটি কর্পোরেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরে দায়িত্ব ছেড়ে না দিয়ে জাতীয় ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠন করা সময়ের দাবি’,- বলেন তারা।
ন্যাপ চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত যতটুকু হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়, সমন্বিতও নয়। খোদ রাজধানীতেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা ও হিমশিম অবস্থা চলছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামর্থ্যের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঢাকায় এডিস মশার বিস্তার প্রতিরোধে এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং এ ক্ষেত্রে গাফিলতি ও ব্যর্থতা এখনও রয়েছে।
তারা আরও বলেন, অন্যদিকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মানুষের বিপদকে পুঁজি করে কিছু বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার নামে ডাকাতি এবং মশা মারার স্প্রে, ওষুধ নিয়ে মজুতদারি ব্যবসা শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে হতাশা, আতঙ্ক, উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। এরকম বিপদ ও দুর্যোগকালে শুধু ঢাকার দুইটি সিটি কর্পোরেশন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর সব দায়দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া ভুল ও আত্মঘাতি হবে।
কেএইচ/জেডএ/এমএস
Advertisement