পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ ব্যাংকের মুনাফায় উল্লম্ফন হয়েছে। তবে ব্যাংকগুলোর মুনাফার এ চিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও ব্যাংকের মুনাফার চিত্রে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে ব্যাংকাররা বলছেন, নানামুখী প্রচেষ্টায় মুনাফায় উন্নতি হয়েছে। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেয়ায় সামনে মুনাফা আরও বাড়তে পারে।
Advertisement
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে আগের বছরের তুলনায় মুনাফা বেড়েছে ২৪টির। গত বছর নগদ অর্থ সংকটে ছিল এমন আটটি ব্যাংকের তারল্য সংকট থেকে বেরিয়ে এসেছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) আর্থিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে ব্যাংকগুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাত নানাবিধ সংকটের মধ্যে রয়েছে। প্রতিনিয়ত খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে হঠাৎ ব্যাংকগুলোর এমন মুনাফা হওয়ার কথা নয়। কীভাবে ব্যাংকগুলোর মুনাফায় এমন উন্নতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।
নিয়ম অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রতি তিন মাস পরপর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। এরই আলোকে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংক চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিক শেষে জানুয়ারি-জুন সময়ের প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে, যা নিয়ম অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জেও পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
Advertisement
ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বা প্রথম ছয় মাসে আগের বছরের তুলনায় এক্সিম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার মুনাফা বেড়েছে।
এর মধ্যে গত বছরের তুলনায় মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে সবার ওপরে রয়েছে এক্সিম ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা গত বছরের তুলনায় বেড়ে চারগুণ ছাড়িয়েছে। শতকরা হিসাবে মুনাফা বেড়েছে ৩৩১ শতাংশ। চলতি বছরের ছয় মাসে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৫৬ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১৩ পয়সা।
মুনাফায় বড় ধরনের উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি ব্যাংকটির তারল্য অবস্থারও উন্নতি হয়েছে। অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বা পরিচালন নগদপ্রবাহের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৩৬ পয়সা। অথচ গত বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ঋণাত্মক ৭ টাকা ৮৬ পয়সা। ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হওয়ার নগদ অর্থের সংকটও দেখা দেয়।
মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ব্যাংকটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১ টাকা ১ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৯ পয়সা। এ হিসাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৫৯ শতাংশ।
Advertisement
এর পরই রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৯৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪২ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় মুনাফা বেড়েছে ১২৬ শতাংশ।
মুনাফায় এমন প্রবৃদ্ধি হলেও ব্যাংকটি নগদ অর্থ সংকটে রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ২ টাকা ৭৬ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ঋণাত্মক ৩০ পয়সা। এ হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকটির তারল্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হওয়া ব্যাংকের চিত্র
ব্যাংকের নাম
শেয়ারপ্রতি মুনাফা
প্রবৃদ্ধি
(শতাংশ)
শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো
২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুন
ট্রাস্ট ব্যাংক
১.৭৭ টাকা
০.৯৮ টাকা
৮১%
৩২.৯১
১৭.০২ টাকা
সাউথইস্ট ব্যাংক
২.২৫ টাকা
১.৩৭ টাকা
৬৪%
৬.৪২ টাকা
৫.৮৪ টাকা
প্রিমিয়ার ব্যাংক
১.৩৪ টাকা
০.৮৪ টাকা
৬০%
১.২৪ টাকা
১.১৫ টাকা
শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক
১.২৪ টাকা
০.৯২ টাকা
৩৫%
৮.০২ টাকা
৫.২০ টাকা
এনসিসি ব্যাংক
১.৩১ টাকা
১ টাকা
৩১%
৭.২৮ টাকা
১১.৮২ টাকা
প্রাইম ব্যাংক
০.৯০ টাকা
০.৭০ টাকা
২৯%
১.৩১ টাকা
৫.৪৯ টাকা
ওয়ান ব্যাংক
০.৫১ টাকা
০.৪০ টাকা
২৭%
১০.০ টাকা
১২.৮৩ টাকা
ইস্টার্ন ব্যাংক
১.৯৫ টাকা
১.৫৫ টাকা
২৬%
১৬.৩০ টাকা
৯.৫২ টাকা
ঢাকা ব্যাংক
০.৭৬ টাকা
০.৭০ টাকা
৯%
২.০৪ টাকা
১৩.৬২ টাকা
মার্কেন্টাইল ব্যাংক
১.৭৯ টাকা
১.৬৯ টাকা
৬%
৩.১১ টাকা
৬.২০ টাকা
পূবালী ব্যাংক
২.১৬ টাকা
২.১১ টাকা
২%
৩.৫৩ টাকা
৪.৯৪ টাকা
ব্যাংকগুলোর দেয়া তথ্যানুযায়ী, মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হওয়ার পরও অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক অবস্থায় আছে এমন ব্যাংক রয়েছে আরও তিনটি। ব্যাংকগুলো হলো- উত্তরা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক। উত্তরা ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা ১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে বেড়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা, সিটি ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা ১ টাকা ৪৪ পয়সা থেকে বেড়ে ১ টাকা ৯১ পয়সা এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৩ টাকা ২৫ পয়সা থেকে বেড়ে ৩ টাকা ৮৩ পয়সা হয়েছে।
ব্যাংকের মুনাফার চিত্র সম্পর্কে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ব্যাংকের মুনাফার চিত্র আপাতত দৃষ্টিতে ভালো লক্ষণ। তবে এর পেছনে কী আছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। কেননা ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। খেলাপি ঋণের মাত্র বেড়েছে। তারপরও তাদের মুনাফা বেশি হচ্ছে কী করে? আমার তো মনে হয় না, সার্বিকভাবে ব্যাংকগুলোর অবস্থা গত বছরের তুলনায় উন্নতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে তারল্য সংকট নেই। ৮৫ হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত তারল্য আছে। কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে- এই যে উদ্বৃত্ত তারল্য তার একটি বড় অংশ সরকারি বন্ড। টেকনিক্যালি এগুলোকে তরল সম্পদ বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে এটা তরল নয়। কারণ হলো, এখান থেকে ক্যাশ জেনারেট করতে আগ্রহী নয় অনেকে। কারণ, এখান থেকে তারা একটি ফিক্সড ইনকাম পায়। যেহেতু এখন ঋণ খেলাপি বাড়ছে, সেহেতু তারা এটা (সরকারে বন্ডে বিনিয়োগ) ধরে রাখে। আমি মনে করি, ব্যাংকের তারল্য থাকলে ঋণ দেয়ার সক্ষমতা বাড়বে। কিন্তু এ সম্পদগুলো এক্ষেত্রে কাজে লাগে না।
এদিকে মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি সাতটি ব্যাংকের তারল্য অবস্থারও উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া।
তারল্য অবস্থার উন্নিত হওয়া ব্যাংকগুলোর চিত্র
ব্যাংকের নাম
শেয়ারপ্রতি মুনাফা
প্রবৃদ্ধি
(শতাংশ)
শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো
২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুন
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক
০.৫১ টাকা
০.৪২ টাকা
২১%
১১ টাকা
ঋণাত্মক ৭.৮০ টাকা
যমুনা ব্যাংক
১.৭৮ টাকা
১.৫২ টাকা
১৭%
১.৮৫ টাকা
ঋণাত্মক ৩.৩৭ টাকা
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক
১.১৫ টাকা
১.০৫ টাকা
১০%
৫.১৬ টাকা
ঋণাত্মক ৯.৪২ টাকা
ইসলামী ব্যাংক
২.০৫ টাকা
১.৮৮ টাকা
৯%
১৯.৮১ টাকা
ঋণাত্মক ১০.৬২ টাকা
সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক
০.৩৯ টাকা
০.৩৭ টাকা
৫%
৩.৩২ টাকা
ঋণাত্মক ১.২০ টাকা
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
১.৪১ টাকা
১.৩৬ টাকা
৪%
৬.৬৭ টাকা
ঋণাত্মক ২.৫৯ টাকা
ব্যাংক এশিয়া
১.০৬ টাকা
১.০৪ টাকা
২%
১০.৩২ টাকা
ঋণাত্মক ৩.৯২ টাকা
ব্যাংকগুলোর মুনাফার চিত্র তুলে ধরা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এটা কী বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অ্যাপ্রুভ (অনুমোদন) করেছে? তাদের বোর্ড অ্যাপ্রুভ করে স্টক এক্সচেঞ্জে দিতে পারে। কিন্তু ফাইনালি বাংলাদেশ ব্যাংক যখন অ্যাপ্রুভ করবে তখন বাস্তব চিত্র বোঝা যাবে। এখন নিজের পোর্টফোলিও ভালো করার জন্য যদি এটা করে, তাহলে অন্য জিনিস। আমার মনে হয়, হঠাৎ মুনাফা এমন বেড়ে যাওয়া উচিত নয়। বিষয়টি আমরা দেখব। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এটা অ্যাপ্রুভ করে তারপর আপনি আমাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করবেন।
এদিকে অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফা আগের বছর থেকে বাড়লেও পাঁচটি ব্যাংকের মুনাফা কমেছে। আইসিবি ইসলামী ব্যাংক বরাবরের মতো লোকসানে রয়েছে। তবে ব্যাংকটির লোকসান আগের বছরের থেকে কমেছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ২৯ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩১ পয়সা। আর চলতি বছরে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৪৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৩৭ পয়সা।
মুনাফা কমে যাওয়া ব্যাংকগুলোর চিত্র
ব্যাংকের নাম
শেয়ারপ্রতি মুনাফা
প্রবৃদ্ধি
(শতাংশ)
শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো
২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন
২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুন
এবি ব্যাংক
০.১৫ টাকা
০.৩৯ টাকা
(৬২%) ৮.৫৭, (১০.৯০)
৮.৫৭ টাকা
ঋণাত্মক ১০.৯০ টাকা
রূপালি ব্যাংক
০.২৮ টাকা
০.৩৫ টাকা
(২০%)
ঋণাত্মক ৯৮.২৬ টাকা
২৯.৮৮ টাকা
ন্যাশনাল ব্যাংক
০.৪২ টাকা
০.৫০ টাকা
(১৬%)
ঋণাত্মক ১.৩০ টাকা
ঋণাত্মক ২.৭৫ টাকা
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
০.০৯ টাকা
০.১০ টাকা
(১০%)
ঋণাত্মক ১১.৪৭ টাকা
৬.২০ টাকা
ব্র্যাক ব্যাংক
২.০৫ টাকা
২.১৭ টাকা
(৫%)
৯.৩৯ টাকা
৩.৭৭ টাকা
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি আনিস এ খান জাগো নিউজকে বলেন, আমদানি-রফতানিসহ সার্বিকভাবে আমাদের ব্যবসা বেড়েছে। অনেকে চেষ্টা করেছেন লোকসান নিয়ন্ত্রণ করতে। সব মিলে ব্যবসা-সংশ্লিষ্টে এবার মুনাফা বেড়েছে। কেউ এক্সচেঞ্জ থেকে, কেউ কমিশন থেকে, কেউ লোন বাড়িয়ে ইনকাম করেছে। এসব কারণেই মুনাফা বেশি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণের নতুন যে রীতি তা এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। এটা কেবলি কার্যকর হচ্ছে। গ্রাহকরা আমাদের কাছে আসছেন প্রজ্ঞাপনের আলোকে সুবিধা নিতে। এতে সামনে মুনাফা কিছুটা বাড়তে পারে।
খেলাপি বাড়ার পরও ব্যাংকের মুনাফা কীভাবে বাড়ছে- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা তো বেশি মুনাফা করলাম। মুনাফা করার পরে প্রভিশন রাখলাম। এ কারণে আমাদের (মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক) মুনাফা বেড়েছে তিন শতাংশ। কিন্তু আমাদের অপারেটিং মুনাফা বেড়েছে ২০ শতাংশ। আমাদের মুনাফা বেশি করতেই হবে। তা না হলে খেলাপি ঋণের এ বোঝা আমরা কেন নেব? বোঝা তো নিতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, আজ একজন আমার কাছে এসে কান্না করতেছেন। বলেন, আমাকে মেরে ফেললেও টাকা দিতে পারব না। আমাকে তো একবার জেলখানায় ঢুকিয়েছেন, আবার ঢুকাবেন। তো আপনি কি চান, আমি জেলখানায় থাকি, নাকি বেঁচে থেকে আপনাকে অর্ধেক টাকা দেই?
তারল্য সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ছয় মাসে অবশ্যই তারল্য সংকট ছিল। তবে সবাই সবসময় চেষ্টা করছেন ব্যাংকগুলো ঠিক রাখতে। ব্যাংকগুলো ঠিক রাখতেই হবে। ব্যাংক খুব গুরুত্বপূর্ণ, ব্যাংক লোকসান করতে পারে না। লোকসান করা ভালো নয়। ব্যাংক প্রফিট করবে এবং শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্ন দেবে।
এমএএস/আরএস/এমএআর/পিআর