ডেঙ্গু নিয়ে তথ্য দিলেও সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
Advertisement
ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদেশে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল। কিন্তু তা বাতিল করা হয়। ওই সময় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসেন মন্ত্রী।
আমন্ত্রণ না জানালেও সাংবাদিকরা উপস্থিত হন সেখানে। সভার শুরুতে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ডেঙ্গু নিয়ে বিভিন্ন তথ্য দেন জাহিদ মালেক। তবে তার বিদেশ যাওয়া ও ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি হলো সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা ১৭ হাজার ১৬৩ জন। ভালো হয়ে চলে গেছে ১২ হাজার ২৬৬ জন। এখন হাসপাতালে ভর্তি ৪ হাজার ৯০৩ জন। এটা প্রতিনিয়ত বাড়ছে-কমছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪ জন।’
Advertisement
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নেত্রকোনো জেলা ছাড়া ৬৩ জেলায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। একটি জেলায় নেই, ওখানেও হয়তো যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু স্বাস্থ্য সেবাই দিচ্ছি না, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করার জন্য মেয়ররা যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছেন। নতুন নতুন ওষুধের ব্যবস্থা করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত আলোচনা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতর আমাদের সঙ্গে রেগুলার আলোচনায় আছেন, রেগুলার মিটিং করছেন। দেশে একটা কো-অর্ডিনেটেড অ্যাফোর্ড নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
‘অল্প সময়ের মধ্যে ১৭ হাজার রোগী ও তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি একটি বিরল ঘটনা। এটা পৃথিবীতে খুব বিরল। আশা করি, অল্প দিনের মধ্যেই এটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমরা হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসায় বেড বাড়িয়েছি’ বলেন জাহিদ মালেক।
তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় সিভিল সার্জনদের জানানো হয়েছে- কীভাবে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে হবে। আমাদের ২৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পুরো বাংলাদেশ ভিজিট করছেন, প্রতিটি জেলায় তারা যাবেন। ডেঙ্গু পরীক্ষায় ৫ লাখের বেশি কিট আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিটের কোনো অভাব হাসপাতালে নেই। আমরা ঈদের ছুটি বাতিল করেছি।’
Advertisement
মন্ত্রীর কথা বলার শেষ পর্যায়ে একজন সাংবাদিক বিদেশ সফর নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই বিরক্তিভাব নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আস্তে, প্লিজ। এখানে মেয়র সাহেবরা আছেন, মেয়র সাহেবরাই কথা বলবেন।’
পরে দুই মেয়রের বক্তব্যের পর সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাইলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা প্রেস ব্রিফিং সেশন নয়। এটা টেকনিক্যাল সেশন।’
এ সময় সাংবাদিকরা বিষয়টি এড়িয়ে না যাওয়ার অনুরোধ জানাতে গেলে কিছুটা কোলাহলের সৃষ্টি হয়।
তখন সচিব বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম টেকনিক্যাল সেশন করে এরপর আপনাদের নিয়ে আলাদা সেশনে ব্রিফ করব। আপনারা অধৈর্য হলে তো হবে না।’
এরপর নতুন মশা মারার ওষুধ কবে আনা হচ্ছে- জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মশা মারতে হবে, অন্য কিছু মারা যাবে না। পরিবেশেরও যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, মানুষেরও যেন কোনো ক্ষতি না হয়। বিষয়টি হাইলি-টেকনিক্যাল। আমরা টেকনিক্যাল কমিটি নিয়ে করছি। বেশ অগ্রগতি হয়েছে। কবে আনছি সেই ডেটটা বলছি না। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব ওষুধ যেন আনা যায়। আমরা সিরিয়াসলি চেষ্টা করছি।’
এরপর মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক সাংবাদিক আবার প্রশ্ন করতে চাইলে আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘প্লিজ, আমাদের এই সেশনটা করতে দেন।’
আরএমএম/এসআর/এমকেএইচ