কদিন আগেও ছিল অর্ধশতাধিক পরিবারের বাস, ছিল সাজানো সুখের সংসার। কিন্তু এখন তা শুধুই অতীত। স্রোতে টেনে নিয়ে গেছে সবার ভিটে-মাটি, ঘর-সংসার। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন গ্রাম ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের শেষে উজানের ঢলে সৃষ্ট বানের স্রোতে তাদের স্বপ্ন ভেসে গেছে। পানির তোড়ে মুহূর্তেই বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর।
Advertisement
বন্যায় নিঃস্ব হয়ে যাওয়া মুদি দোকানি এরশাদুল (৪০) বলেন, কাঁচকোল-থেকে বুরুজের পাড় হয়ে ব্যাপারীর হাটগামী সড়কটি ছিঁড়ে পানির ঢল গ্রামের দিকে তেড়ে আসে। মুহূর্তেই একের পর এক বসতবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। দোকান ভেসে যাওয়ার আতঙ্কে মালামাল ঘরে তুলেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি সেখানেও। দোকানের তিন লক্ষাধিক টাকার মালামালসহ আধাপাকা বাড়িটি স্রোতে ভেসে যায়। এতে তিনি প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মতো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। এখন তিনি একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঘরবাড়ি হারানো আবু বক্কর (৬৫) বলেন, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে সব শেষ। আমরা কিছুই পাইনি। সব বানে নিয়া গেছে।
মানিক মিয়া বলেন, ঘরে ১০/১২ মণ ধান ছিলো, সব ভেসে গেছে। একই কথা জানালেন, প্রদীপ চন্দ্র (৩৫), মিন্টু মিয়া (৪০), আনিছুর রহমানের (৪০) পরিবারসহ অর্ধশতাধিক পরিবার।
Advertisement
ঘরবাড়ি হারানো এই মানুষগুলো আশপাশের এলাকার স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, অনেকে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা বাঁধে থাকছেন। এসব মানুষদের সামনে এখন দুঃস্বপ্ন তাড়া করছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করা হবে।
নাজমুল হোসাইন/আরএআর/এমএস
Advertisement