বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘ডেঙ্গু ও বন্যা পরিস্থিতি আড়াল করতে সরকার গুজবের কথা বলছে। গুজব নয়, দেশে গজব এসেছে।’
Advertisement
এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘শিশু ধর্ষণ, বন্যা পরিস্থিতি, গণপিটুনিতে মানুষ হত্যা, নারী হত্যা, ডেঙ্গু কোনোটাই গুজব নয়। এগুলো আসলে গজব।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার (৩১ জুলাই) ‘ডেঙ্গু রোগ, বর্তমান প্রেক্ষাপট ও আমাদের করণীয়’- শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি শাসনামলের এ স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
Advertisement
মোশাররফ বলেন, ‘সরকার তার ব্যর্থতাগুলো আড়াল করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুজব বলে চালিয়ে যাচ্ছে। যদি জনগণের নির্বাচিত সরকার হতো, গণতন্ত্রের সরকার হতো তাহলে তারা দেশের মানুষের প্রতি আন্তরিক হতো। সরকার আন্তরিক হলে এগুলোকে গুজব বলতে পারতো না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময় থেকে এডিস মশা জন্মানোর খবর আমরা দেখতাম। এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়। তখন আমরা সফল ছিলাম। ২০০৬ সালে ২ হাজার ২০০ লোক আক্রান্ত হয়েছিল। ২০০৮ এ আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৪৬ জন। পরে আর কেউ খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। তাই দেশের আজ এ অবস্থা।’
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, যদি গণতান্ত্রিক দেশ হতো তাহলে এরই মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুই মেয়র পদত্যাগ করতেন। কিন্তু আজ শুনতে পেরেছি স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের বাহিরে চলে গেছেন। তারা জনগণের সরকার হলে মানুষকে এমন বিপদে রেখে দেশের বাইরে থাকতে পারতেন না। আজকে প্রধানমন্ত্রীও দেশের বাইরে। দুই সিটি কর্পোরেশন হাইকোর্টের নির্দেশও মানেনি। হাইকোর্ট আবারও জানতে চেয়েছে কতদিনের মধ্যে ওষুধ আসবে। আইসিডিআর,বির গবেষণায় বর্তমান যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তাকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরও তারা এসব ওষুধ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সিটি কর্পোরেশনের কমিশন বাণিজ্য করার জন্য নিম্নমানের ওষুধ আসছে।
দেশের বন্যাও নিয়ন্ত্রণ করা যেত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫৪টা নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছে। সেগুলোতে বাঁধ আছে। যদি ভারতের সঙ্গে কথা বলে পর্যায়ক্রমে গেটগুলো ছেড়ে দিতো তাহলে বন্যাও নিয়ন্ত্রণ করা যেত। জনগণের সরকার না হওয়ায় সরকার শক্তিশালী নয়। সরকার যদি আন্তরিক ও শক্তিশালী হতো তাহলে এমন বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষকে পড়তে হতো না। এ সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ।’
Advertisement
দেশের হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গু সেন্টার নির্দিষ্ট করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্দেশনা জারি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। অযথা জনগণকে আতঙ্কিত না করে সরকারি-বেসরকারি সব চিকিৎসককে সেখানে ব্যবহার করার কথাও বলেন মোশাররফ।
ডেঙ্গু ও বন্যা পরিস্থিতিতে জাতীয় সঙ্কট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐকমত্য দরকার। এ জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি করার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ড. হারুন আল রশিদ। অন্যদের মধ্যে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, শামীমুর রহমান শামীম, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভা শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে র্যালি বের হয়। র্যালি থেকে ডেঙ্গু সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিলি করা হয়।
কেএইচ/এনডিএস/এমএস