প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। তাকে সেখান থেকে নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা কী করছেন? তাদের বেতন-ভাতা-গাড়ি সবই জনগণের করের টাকায়। কিন্তু জনগণ সেবা পাচ্ছে না। কথা বললে তো বলবেন বেশি বলছি। প্রশাসন যেখানে ব্যর্থ হচ্ছে জুডিশিয়ারি সেখানে হস্তক্ষেপ করছে।
Advertisement
বিচারদের নিরাপত্তা নিয়ে মশা নিধনের প্রসঙ্গ টেনে বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার মশা রোধের বিষয়ে গ্রহণ করা পদক্ষেপ যথাযথ হচ্ছে না বলেই রাজধানীসহ সারা দেশে মশাবাহিত জ্বর বেড়েছে, তাই ডেঙ্গু নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে।
আদালত আরও বলেন, তিন জেলা ছাড়া সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। এখন একেবারে শেষ পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন নড়ে চড়ে বসলেন। কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ে আমরা ফেব্রুয়ারিতে সতর্ক করেছিলাম। দুই সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের ডেকে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া রোধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা গা (আমলে নেননি) করেননি। ২-৩ জন মরার পর ভাসা ভাসা কথা বললেন। কিন্তু এখন তো সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়।
Advertisement
পরে ওই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন,‘আদালত বলেছেন আমাদের দেশে কোনো কিছুই প্রথম থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয় না। যখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে তখন সবাই নড়েচড়ে বসেন। এ প্রসঙ্গে বলেছেন, দুই সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে এসেছিলেন। তখন বলেছিলেন সামনে বর্ষা মৌসুম। এখন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। যেন চিকুনগুনিয়া-ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যায়, মশার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ওনারা যদি তখন আদালতের নির্দেশ মানতেন, তাহলে আজকে মশা যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে সেটা করতে পারতো না।’
তিনি বলেন, ‘আদালত আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন। সেখানে চিকিৎসাকালীন সময় যারা দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ রয়েছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে, নির্দেশ দিতে হচ্ছে।
প্রশাসনের এই যে ব্যর্থতা ও দুর্বলতা এটা ওনারা (আদালত) অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন। ভয়াবহ রূপ ধারণ করার আগে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’
এর আগে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন। ওই রুলের শুনানিতে দুই সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ তলব করেছিলেন। সেদিন মশা নিয়ে কথা বলেছিলেন আদালত।
Advertisement
এফএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম