দেশজুড়ে

বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ

ভারতীয় ট্রাক চালকদের বেনাপোল বন্দরে নানা হয়রানির প্রতিবাদে ভারতের পেট্রাপোল এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট মেইনটেন্যান্স কমিটির (ট্রাক মালিক সমিতি ও ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি) ডাকা ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে, গত ২৭ জুলাই পেট্রাপোল বন্দরে সমাবেশ করে এ ধর্মঘটের ডাক দেন পেট্রাপোল এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট মেইনটেন্যান্স কমিটি। তবে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক ছিল।

আমদানি-রফতানি বন্ধে দু’দেশের বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শতশত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও পচনশীল পণ্য রয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত নাইট গার্ড, বন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা ভারতীয় ট্রাক চালকরা রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল স্থলবন্দরে নিয়ে এলে তাদের কাছ থেকে বকশিসের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে। বিষয়টি বারবার বেনাপোলের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এরই প্রতিবাদে ও প্রতিকারের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ট্রাক চালক ও মালিকরা। ভারতীয় ট্রাক চালক শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, আমদানি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর বেনাপোল বন্দরে বিভিন্ন সংগঠনের কাছে নানাভাবে হয়রানি হতে হয়। তারা বকশিসের নামে জোর করে টাকা আদায় করে। এসব সমস্যা সমাধান না হলে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে যাবে না এবং বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য ভারতীয় ট্রাকে বোঝাই হবে না বলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে আমদানি-রফতানি সচল রাখার ব্যাপারে সোমবার সন্ধ্যায় বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের বিভিন্ন সংগঠনের উপস্থিতিতে পূর্বে পণ্য আনলোডে যে টাকা ধার্য করা হয়েছিল সেটাই বলবৎ থাকবে।

Advertisement

অতিরিক্ত টাকা কেউ নিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। অপরদিকে ধর্মঘট প্রত্যাহারে বেলা ১১টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে দু’দেশের বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়।

বিকেল ৫টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট বন্দরের প্রশাসনিক ভবনে আবারও আলোচনায় বসেছে দু’দেশের নেতারা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬-৩০) আলোচনা চলছিল। বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টম কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ভারতের ট্রাক মালিক সমিতি ও ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, এ নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ দুই পক্ষের সাথে কথা বলে বাণিজ্য সচলের চেষ্টা করছেন।

মো. জামাল হোসেন/এমআরএম

Advertisement