রমজান মাস সম্পর্কে আমাদের মাঝে এমন কিছু ভুল-ভ্রান্তি রয়েছে যা কিনা বহুদিন ধরে আমাদের মাঝে প্রচলিত রয়েছে। জানার সঠিক উৎসের অভাবে এসব ভুল-ভ্রান্তি একেক স্থানে একেক রকম হয়ে থাকে। আজ জেনে নেয়া যাক রমজান সম্পর্কে কয়েকটি মাসালা-রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে অজ্ঞতা:কিছু মানুষ রমজান মাসকে গ্রহণ করে বছরের অন্যান্য মাসের ন্যায়, অথচ এটি ভুল; কারণ সহীহ হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,«إِذَا جَاءَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ، وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ، وَصُفِّدَتِ الشَّيَاطِينُ»“যখন রমজান আসে, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয়, আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলিত করা হয়।” [বুখারী ও মুসলিম]অপর একটি বর্ণনায়:«وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ»“আর শয়তানদেরকে বেড়ি পরানো হয়।”কিছু মানুষ রোযার জন্য নিয়তকে নির্দিষ্ট করে না:যদি রোজাদার রমজান মাসের প্রবেশ সম্পর্কে জানে তাহলে তার ওপর রোজার নিয়ত নির্দিষ্ট করা আবশ্যক হয়ে যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে তার কথায় বর্ণিত হয়েছে:«مَنْ لَمْ يُبَيِّتِ الصِّيَامَ مِنَ اللَّيْلِ، فَلَا صِيَامَ لَهُ»“যে সিয়ামের নিয়ত রাত্রি হতে নির্দিষ্ট করে না, তার কোনো সিয়াম নেই।” [নাসাঈ]কেউ কেউ নিয়ত মুখে উচ্চারণ করে:এটি ভুল। বরং অন্তরের নিয়ত নির্দিষ্ট করাই যথেষ্ট। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা রাহিমাহুল্লাহ বলেন:“والتكلم بالنية ليس واجبا بإجماع المسلمين، فعامة المسلمين إنما يصومون بالنية وصومهم صحيح ”“আর মুসলিমদের ঐকমত্যে নিয়ত মুখে বলা ওয়াজিব নয়। কারণ, সাধারণ মুসলিমরা অন্তরে নিয়ত করেই রোজা রাখে, আর এতেই তাদের সাওম বিশুদ্ধ হয়ে যায়।” [আল-ফাতাওয়া খণ্ড নং:২৫, পৃষ্ঠা নং:২৭৫]কিছু রোজাদার মাগরিবের আজান অনুসরণ (উত্তর দেয়া) ত্যাগ করে ইফতারে ব্যস্ত হয়ে যায়:এটি ভুল; কেননা রোজাদারের এবং বে-রোজাদার সবার জন্যই সুন্নত হলো মুয়াজ্জিনের (আজান) অনুসরণ করা এবং সে যা বলে তাই বলা। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,«إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ، فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ المُؤَذِّنُ»“যদি তোমরা ডাক (আজান) শোনো, তবে তোমরা বল যেরূপ মুয়াজ্জিন বলেন।”আর মুয়াজ্জিনকে অনুসরণ করতে হবে ইফতার করার সঙ্গেও। কারণ মুয়াজ্জিনকে অনুসরণ এবং আজান বলার সময় খাওয়ার থেকে নিবৃত্ত থাকার কথা বর্ণিত হয়নি। আল্লাহই অধিক জানেন। [বুখারী ও মুসলিম]
Advertisement