জাতীয়

দুই কোম্পানির কাছে আমদানি করা মশার ওষুধ জিম্মি : মেয়র আতিকুল

মশক নিধনের ওষুধ এখন থেকে সিটি কর্পোরেশন সরাসরি আমদানি করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম

Advertisement

‘দুই কোম্পানির কাছে আমদানি করা মশার ওষুধ জিম্মি রয়েছে’- অভিযোগ করে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভেঙে এখন থেকে আমরা নিজেরাই সরাসরি ওষুধ আমদানি করব। শুধু দুই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এ সিস্টেমকে ম্যানেজ করে রেখেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা ওষুধ নিয়ে আসব। এ ওষুধ দিয়ে কীভাবে বা কী পর্যায়ে মশা মরবে- সে বিষয়ে আইডিসিআর ও আসিডিআর এবং সরকারসহ বিভিন্ন এজেন্সি কাজ করবে।

সোমবার দুপুরে গুলশান ক্লাবে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দুই কোম্পানির নাম প্রকাশ না করে মেয়র আতিকুল বলেন, ওই দুই কোম্পানির জন্য মশার ওষুধের আমদানিকারক ওষুধ আমদানি করতে পারে না। তারা ওই সিস্টেমটাকে ম্যানেজ করে রেখেছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরাই ওষুধ নিয়ে আসব।

Advertisement

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকার বাইরে এখন পর্যন্ত ৬১১ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. সানিয়া তহমিনা। তিনি বলেন, বিষয়টি উদ্বেগজনক।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গতকাল রোববার (২৮ জুলাই) পর্যন্ত দেশে ১১ হাজার ৬৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন আটজন। কিছু কিছু গণমাধ্যম এ সংখ্যা ৩০ এর অধিক বলে জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. সানিয়া তাহমিনা সোমবার জানান, এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে যত রোগী পাওয়া গেছে, আমি বলব ৯০ শতাংশ রোগী ঢাকা থেকে গেছে। তারপরও আমি আত্মসন্তুষ্ট থাকতে চাই না। কারণ তারপরও ওই রোগীদের থেকে ডেঙ্গু ছড়াবে।

Advertisement

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর সম্পূর্ণভাবে সতর্ক এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সানিয়া তাহমিনা বলেন, ‘জেলাগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আজ কিট (এক ধরনের ডিভাইস) পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকেও যেন এটা কোনোভাবে ছড়িয়ে না যায়, সে বিষয়েও আমরা সতর্ক থাকার জন্য চেষ্টা করছি।’

বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ডেঙ্গুর ফি নির্ধারণের বিষয়ে সানিয়া বলেন, ‘ডেঙ্গুর জন্য যে ৪টা পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়, এগুলো করতে মোট ১ হাজার ৪০০ টাকা লাগবে। এ টাকা ঠিক মতো রাখা হচ্ছে কি-না, তা তদারকির জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে মনিটরিং শুরু হয়েছে। ১০টা টিম গঠন করে এ মনিটরিং শুরু হয়েছে রোববার থেকে।’

গতকাল রোববার ডেঙ্গু টেস্টের ফি ৫০০ টাকার বেশি না নেয়ার নির্দেশনা দেয় সরকার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল অফিসার (হাসপাতাল) ডা. শাহ আলম সিদ্দিকী এ প্রসঙ্গে বলেন, ডেঙ্গু Ns1 পরীক্ষা সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য ভবনের সম্মেলন কক্ষে সভা শেষে এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় ডেঙ্গু টেস্টের ফি নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১. ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের জন্য টেস্টগুলোর মূল্য নিম্নরূপ হবে : ক. NS1- ৫০০ টাকা (সর্বোচ্চ), যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা।

খ. IgM + IgE অথবা IgM/ IgE- ৫০০ টাকা (সর্বোচ্চ), যার পূর্ব মূল্য ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা।

গ. CBC (RBC + WBC + Platelet + Hematocrit)- ৪০০ টাকা (সর্বোচ্চ), যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার টাকা।

এ মূল্য তালিকা রোববার (২৮ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই মূল্য তালিকা কার্যকর থাকবে।

এমএআর/এমএস