পাবনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে আরও ১২ রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয়দিনে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৯ রোগী ভর্তি হলো।
Advertisement
রোববার যারা ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে এক শিশু ও এক নারী রয়েছেন। এছাড়া শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গত এক সপ্তাহে আরও ৩০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। সবমিলে ছয়দিনে কমপক্ষে ৬০ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে পাবনা জেনারেল হাসাপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা বা কিটস না থাকায় চিকিৎসক ও নার্সসহ জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু পরীক্ষার প্রয়োজনীয় কিটস বা প্রযুক্তি সরবরাহের জন্য জরুরি বার্তা পাঠালেও রোববার দুপুর পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত রোববার নতুন ১২ রোগী ভর্তির সত্যতা স্বীকার করে জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা করার পর পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। তবে এ হাসপাতালে চিকিৎসার কোনো ব্যত্যয় হচ্ছে না।
Advertisement
সহকারী পরিচালক আরও বলেন, ইতোমধ্যে তিনি ১১ সদস্যের একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছেন। চিকিৎসকরা রোগীদের সুচিকিৎসা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নতুন করে ১২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগের দিন শনিবার ১৫ রোাগী ভর্তি হন।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও বিএমএ সাধারণ সম্পাদক (পাবনা) ডা. আকসাদ আল মাসুর আনন জানান, গত ২৩ জুলাই থেকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি শুরু হয়। রোববার পর্যন্ত ২৯ জন ভর্তি হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়লেও তাদের অধিকাংশই ঢাকা থেকে ফেরত এসেছেন। অর্থাৎ তারা ঢাকায় থাকতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পাবনায় আসেন।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের বাইরেও শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে ৩০ রোগী চিকিৎসা নেন। অনেকে এসব বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ফেরার পরপরই অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তাদের রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু সংক্রমণের অস্তিত্ব মেলে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তিরতদের মধ্যে ছাত্র, পরিবহন শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও গার্মেন্টস কর্মী রয়েছেন। তাদের সবার বাড়ি পাবনা জেলায়।
তারা অভিযোগ করেন, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সরকারিভাবে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। চিকিৎসার ব্যয়ও বাড়ছে তাদের।
এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসাপাতালের সহকারী পরিচালক জানান, আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটস সরবরাহের জন্য জরুরি বার্তা পাঠিয়েছি। কিন্তু রোববার দুপুর পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মির্জা মেহেদী ইকবাল বলেন, খুব একটা উদ্বেগের কারণ নেই। কারণ, পাবনায় কোনো এডিস মশার সন্ধান পাওয়া যায়নি। যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তারা সবাই ঢাকা ফেরত। তারপরও আমরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি।
একে জামান/এমএআর/জেআইএম