রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা গাজীপুরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল শনিবার ও আজ রোববার দুই দিয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
Advertisement
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানান, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ২৮ জুলাই দুপুর পর্যন্ত ৭২ জন ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১ জন (১৯ জন পুরুষ ও দুইজন নারী) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা নেয়ার পর চলে গেছেন।
তিনি আরও জানান, বছরের শুরুতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও গত জুন মাস থেকে এ রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। হাসপাতালে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সেখানে রোগীদের মাঝে ফ্রি মশারিও সরবরাহ করা হয়েছে।
তবে রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে অনেকেই মশারি ব্যবহার করছেন না। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী গাজীপুর মহানগরীর ছায়াবিথী এলাকার ব্যবসায়ী সুজন (৩০) জানান, তার কাছ থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য ২০০ টাকা নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে টয়লেটের পরিবেশ খুবই নোংরা। টয়লেটের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। ছাতা নিয়ে টয়লেটে যেতে হয়।
Advertisement
একই অভিযোগ করেন অপর ডেঙ্গু রোগী মহানগরীর খাইলকুর এলাকার শেখ মহিউদ্দিন।
টাকা নেয়ার ব্যাপারে ডা. প্রণয় জানান, ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে সকল পরীক্ষা করার নির্দেশা পেয়েছি আজ ২৮ জুলাই। এ নির্দেশনা পাওয়ার আগে কয়েকজন রোগীর কাছ থেকে টাকা নেয়া হলেও পরবর্তীতে আর নেয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালের আশেপাশে নোংরা ও আবর্জনাসহ জলাশয়গুলোতে মশা নিধনের ওষুধ প্রয়োগ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য গাজীপুর সিটি মেয়র বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।
হাসাপতালের টয়লেটের ছাদ দিয়ে পানি পড়ার কথা স্বীকার করে আবাসিক চিকিৎসক জানান, টয়লেটে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ছাদ দিয়ে পানি পড়া বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।
Advertisement
এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন কাজ করছে। কে কোথায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে তা মনিটর করা হচ্ছে। আমাদের লোকজন আক্রান্তদের কাছে ছুটে যাচ্ছে এবং তার চিকিৎসার সার্বিক দেখভাল করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই যেন ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে না পারে সেজন্য আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। সবাই যেন বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করে রাখেন সেজন্য নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য কোরিয়া ও জার্মানি থেকে ৪০টির মতো মেশিন আনা হয়েছে। শিগগিরই আরও কিছু মেশিন আনা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড-মহল্লাভিত্তিক ওষুধ ছিটানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
মো. আমিনুল ইসলাম/এমবিআর/পিআর