দেশজুড়ে

মানিকগঞ্জে ১৪ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত, টেনশনে চিকিৎসকরা

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগ। প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নারী-শিশুসহ ১৪ ডেঙ্গু রোগী।

Advertisement

জেলায় প্রথমবারের মাতো হঠাৎ করেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জনমনে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা হলেন- পৌরসভার পশ্চিম সেওতা এলাকার জাকির হোসেনের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে জেবা আক্তার (১৫), সদর উপজেলার পাছ বাড়ইল গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া আফরিন, সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া গ্রামের মামুন মিয়ার স্ত্রী রাশেদা বেগম (২৮), সদর উপজেলার বংখুরি গ্রামের সাইদুর রহমানের স্ত্রী মারিন আহমেদ (১৮), সদর উপজেলার জুকুরিয়া গ্রামের সিরাজ বেপারির ছেলে সজিব (২০), সাটুরিয়া উপজেলা রাধানগর গ্রামের বিনয় চক্রবর্তীর ছেলে টুটুল চক্রবর্তী, ঘিওর উপজেলার মহিউদ্দিন (১৮), সদর উপজেলার আকমিন (২০), দৌলতপুর উপজেলার সাইফুল ইসলাম (২০), সাটুরিয়া উপজেলার আল-আমিন (১৫) ও সদর উপজেলার মুন্না (২০)।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আব্দুল আওয়াল বলেন, মানিকগঞ্জে গত বছরও ডেঙ্গু রোগীর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এ কারণে ডেঙ্গু রোগ পরীক্ষার যন্ত্রের প্রয়োজন পড়েনি। হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় টেনশনে পড়েছি আমরা। চলতি অর্থবছরের বাজেট শেষ হওয়ায় ইচ্ছা করলেই ওসব যন্ত্র কেনা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আমরা।

Advertisement

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. লুৎফর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী আসতে শুরু করেছে। তবে গত দুইদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিশ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে রক্তের তিনটি পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে সিবিসি ও প্লাটিলেট পরীক্ষার ব্যবস্থা হাসপাতালে আছে। কিন্তু কিট এবং রিএজেন্ট সরবরাহ না থাকার কারণে এনএসওয়ান পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। রোগীরা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষাটি করাচ্ছেন।

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, জেলা হাসপাতাল ছাড়া কোনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সীমিত সাধ্যের মধ্যে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সরকারি হাসপাতালে কিট এবং রিএজেন্ট সরবরাহ না থাকার কারণে এনএসওয়ান পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। কিট ও রিএজেন্ট সরবরাহ না থাকার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে কিট ও রিএজেন্ট ক্রয় করা হবে।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি জানার পর শনিবার সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সার্বিক) হাসপাতাল পরিদর্শনে পাঠাই। নিয়মিত বরাদ্দ না আসা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষার সব ব্যবস্থা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

বি.এম খোরশেদ/এএম/এমএস