বাসি খিচুড়ি ফেলে দেয়ায় গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে স্বামী-শাশুড়ি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের ছাগলদী গ্রামে। ঘটনার পর থেকেই কাওসারসহ পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।
Advertisement
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে ছাগলদী গ্রামের কাওসার মুন্সীর স্ত্রী কাদরিয়া (২১) আগের দিনের রান্না করা বাসি খিচুড়ি ফেলে দিয়ে হাড়ি পাতিল পরিষ্কার করে ফেলেন। খিচুড়ি ফেলে দেয়ায় শাশুড়ি সবজান খাতুন গৃহবধূ কাদরিয়া বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন। এতে বউ ও শাশুড়ি উভয়ের মধ্যে তুমূল ঝগড়া হয়।
এ সময় স্বামী কাওসার মুন্সী ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী কাদরিয়া বেগমকে মারধর করে এক পর্যায়ে কাওসার ও তার মা কাদরিয়া বেগমের সালোয়ার কামিজে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠলে কাদরিয়া বেগম বাঁচার জন্য চিৎকার শুরু করেন।
কাদরিয়ার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে কাদরিয়া বেগমের নিম্নাংশের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। কাদরিয়াকে উদ্ধার করে দ্রুত নগরকান্দা হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
Advertisement
সূত্র জানায়, নগরকান্দা উপজেলার ছাগলদী গ্রামের বেলায়েত শেখের কন্যা কাদরিয়ার সঙ্গে সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের একটি ছেলের দুই বছর আগে বিবাহ হয়। বিয়ের পর কাদরিয়া একই গ্রামের কাওসার মুন্সীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কাদরিয়াকে তার স্বামীর কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনেন কাওসার।
কিছুদিন পার হতেই কাদরিয়াকে বিয়ে করতে রাজী হয় না কাওসার। পরে কাদরিয়া বেগম বিয়ের দাবিতে কাওসারের বাড়িতে অনশন করেন। এলাকাবাসীর চাপে কাদরিয়াকে বিয়ে করতে রাজী হন কাওসার মুন্সি। মাত্র দেড় মাস আগে কাওসার কাদরিয়াকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। বিয়ের দেড় মাস পর কাদরিয়াকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় স্বামী কাওসার ও শাশুড়ি সবজান খাতুন।
কাদরিয়ার পিতা বেলায়েত শেখ অভিযোগ করে বলেন, কাওসারের মা সবজান বেগম একজন ভয়ানক নারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। মা-ছেলে দু’জনে মিলে আমার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। কাওসারসহ পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
নগরকান্দা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিরাজ হোসেন বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নগরকান্দা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Advertisement
বি কে সিকদার সজল/এমআরএম/এমএস