পাবনায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগ। গত তিন দিনে পাবনা সদরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩০ নারী-পুরুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। শনিবার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে এবং ডাক্তারের প্রাইভেট চেম্বারে কমপক্ষে ২০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
এদিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু শনাক্ত করার প্রয়োজনীয় সুবিধা সরবরাহের জন্য জরুরি বার্তা পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরে। পাবনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবরে জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা পাবনার বাসিন্দা হলেও তাদের কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে ফেরার পরপরই অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হন এবং পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের শরীরে ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটেছে। হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। শনিবারই ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। এর আগে ২/৩জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
তিনি আরও জানান, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বাহির থেকে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে।
Advertisement
রঞ্জন কুমার দত্ত বলেন, আমাদের এমন কোনো কিটস নেই যাতে আমরা ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করতে পারি। যখন রোগী আসে তখন আমরা এই রোগের পরীক্ষার জন্য প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হই। ডেঙ্গু যদি শনাক্ত হয় তবে আমরা তাদের চিকিৎসা দেই।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আকসাদ আল মাসুর আনন বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই একটি হেল্প ডেস্ক খুলেছি এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে অনুরোধ করেছি। বিএমএ’র পক্ষ থেকেও একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছি রোগীদের সহায়তার জন্য।
পাবনা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. আব্দুস সাত্তার বলেন, আমার ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিনই ২/১ জন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আসছেন। আমি গত পাঁচদিনে অন্তত ১১ জনকে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা দিয়েছি। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তারা সবাই ঢাকা থেকে রোগটি বহন করে এনেছেন।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মির্জা মেহেদী ইকবাল বলেন, একটি সুখবর হল পাবনায় কোনো এডিস মশা নেই। যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তারা সবাই ঢাকা ফেরত। তারপরও আমরা শহরের মশা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি পাঠিয়েছি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও নির্দেশনা পেলে মশা পরীক্ষা এবং নিধনের ব্যাপারে কাজ শুরু করা হবে।
Advertisement
একে জামান/আরএআর/এমএস