দেশজুড়ে

হাওরে মাছ ধরার ধুম

টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে হাওরে ভেসে গেছে খামারিদের মাছ। আর সেই মাছ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছেন হাওরের মৌসুমী মৎস্যজীবীরা। প্রতিটি হাওরে চলছে নৌকায় মাধ্যমে জাল ফেলে মাছ শিকারের ধুম।

Advertisement

সরেজমিনে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওর এবং তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওর ঘুরে দেখা যায়, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের ফলে হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানিতে ভেসে যাওয়া খামারিদের মাছ হাওরে গিয়ে পড়ে। এতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অসময়ে মাছ শিকার করে সংসার চালাচ্ছেন হাওরের সাধারণ মানুষ। কোনো কাজ না থাকায় বর্তমানে মাছ শিকারই তাদের শেষ ভরসা।

এজন্য প্রত্যেক হাওরে নৌকা ও জালের সমাহার। এক হাওরেই ৫০-৬০ জন মানুষ মাছ শিকারে ব্যস্ত। বড় ও দেশীয় মাছ কম হলেও বেশিরভাগ মিলছে ট্যাংরা, সরপুঁটি, মলা, ঢেলা, চেলাসহ ইত্যাদি।

দেখার হাওরের মাছ শিকারি আফতাব মিয়া বলেন, ‘এখন আমরার কাজ নাই। হাওরে পানি ওইছে তাই জালটা নিয়া বের হইছি। মাছ আছে কিন্তু ছোট ছোট। এখন হাওরের সবাই মাছ নিয়া ব্যস্ত। আমরা গরিব মানুষ, যা মাছ পাই তা নিজের পেটোই ভালা করিয়া পড়ে না।’ আরেক মাছ শিকারি সুজন বলেন, ‘হাওরের মাছ নাই। খুব কম মাছ। আর এক জায়গায় যদি ১০-১৫ জনে মাছ শিকার করাত আয়ে, তাইলে মাছ পাইমু ক্যামনে। সরকার চাল দিছে, কিন্তু শুধু চালতো আর খাওয়া যায় না, লগেও কিচ্ছু লাগে। তাই মাছ চাষ করি।’

Advertisement

শনির হাওরে মাছ শিকারি রুপক দাশ বলেন, ‘আগের মতো মাছ হাওরে নাই। আগে হাওরে অনেক রকমের দেশীয় মাছ পাওয়া গেলেও এখন যা পাওয়া যায় ইতা বিভিন্ন ফিসারির মাছ। বড় মাছ নাই হাওরে।’ এদিকে মাছ শিকারিরা হাওরে ব্যস্ত সময় পার করলেও খামারিরা রয়েছেন বিপাকে। ঋণ-সুদে টাকা এনে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, পাহাড়ি ঢল ও সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ ৬১ হাজার ২০০ টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, এবারের বন্যায় আমাদের মৎস্য সম্পদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। যা প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকারও বেশি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।

মোসাইদ রাহাত/এফএ/এমএস

Advertisement