ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে তিন তালাক নিষিদ্ধের বিল। তাৎক্ষণিক তিন তালাককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতেই বৃহস্পতিবার এই বিল পেশ করেছে কেন্দ্র। বিলের পক্ষে ৩০৩টি ভোট পড়েছে আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে ৮২টি। ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি তৃণমূল। ছিল না জেডিইউ, কংগ্রেস। লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সহজেই পাস হয়েছে এই বিল। তবে রাজ্যসভায় বিল পাস করাটাই চ্যালেঞ্জ মোদি সরকারের।
Advertisement
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৭ সালেই নিষিদ্ধ হয়ে যায় তাৎক্ষণিক তিন তালাক। তারপরেও এই প্রথা বন্ধ না হওয়ায় একে বেআইনি ঘোষণা করতেই সরকার পেশ করে তিন তালাক বিল। এই বিল অনুসারে স্ত্রীকে তালাক দিলে স্বামীর তিন বছর পর্যন্ত জেল হবে। তাৎক্ষণিকভাবে স্ত্রীকে তিনবার তালাক বলে দিয়েই বিবাহবিচ্ছেদ করতেন বহু মুসলিম পুরুষ। ফোনে এসএমএস করে, হোয়াটসঅ্যাপ করে বা চিঠি লিখেও ৩ তালাক দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে একাধিকবার। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে প্রায় ৬০০-এর কাছাকাছি মামলা দায়ের হয়েছে।
লোকসভায় তিন তালাক বিল পেশ করেন আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। বিলের কিছু অংশ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল বিরোধীপক্ষের। তাদের মতে এই বিল পাশ হলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতি অবিচার হবে। লিঙ্গ সাম্যই এই বিলের প্রধান লক্ষ্য বলে জানান রবি শংকর প্রসাদ।
কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হলে এই আইনের অপব্যবহার করা হতে পারে। পাশাপাশি আরএসপি সাংসদ প্রেম চন্দ্রনের মতে হিন্দু বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য এরকম কোনও আইন নেই সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র ইসলামের জন্য এই আইন প্রযোজ্য হলে তা বৈষম্যের সমান। ইসলাম ধর্মাবলম্বী নারীদের প্রতি ন্যায্য বিচার করতেই এই বিল পাস হওয়া প্রয়োজন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
Advertisement
রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নয়, মুসলিম নারীদের অধিকার রক্ষা করতেই এই বিল প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। অপরদিকে, সন্ত্রাসবাদ ও তিন তালাকের অপরাধকে একই সরলরেখায় টেনে এনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদী কাজে জড়িত থাকলে যেমন জেলে যেতে হয়, তেমনই তিন তালাক দিলেও জেলে যেতে হবে। সন্ত্রাসবাদ যেমন অপরাধ, তিন তালাকও তেমনই অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
টিটিএন/এমএস