দেশজুড়ে

মেয়রের বিরুদ্ধে ভোটারদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সদস্য পদে উপ-নির্বাচনে কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ভোট দিতে গিয়ে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান এ অভিযোগ করেন।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল (দক্ষিণ), বিষ্ণপুর, পাহাড়পুর ও আখাউড়া উপজেলার মোগড়া, আখাউড়া উত্তর, আখাউড়া দক্ষিণ ও আখাউড়া পৌরসভা এলাকা নিয়ে জেলা পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড। আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম ভূঁইয়া এ ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এর ফলে বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া (তালা প্রতীক) এবং এ কে এম আতাউর রহমান (হাতি প্রতীক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, বিজয়নগর উপজেলার তিন ইউনিয়নের প্রায় ৪১ জন ভোটার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যাই। এ সময় আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল নিজেই সবাইকে বলেন- হাতি মার্কায় (এ কে এম আতাউর রহমান) ভোট দিতে হবে, তাছাড়া ভোট দিতে পারবেন না।

Advertisement

পরে তার লোকজন দিয়ে আমাদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। এ সময় মেয়র কাজল ও তার লোকজন উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স থেকে বের করে প্রধান ফটকের বাইরে নিয়ে সিংগারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামসহ অন্যদের মারধর করেন। পরে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তারের কাছে গিয়ে এসব বিষয়ে অভিযোগ করি। কিন্তু তিনি নির্বাচনে কোনো দায়িত্বে নেই বলে জানান।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসব ঘটনার সময় পুলিশ ও প্রশাসন উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা ৪১ জন ভোটারের কেউ ভোট দিতে পারিনি। তিনি এই নির্বাচন বাতিলের দাবি জানান।

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। তার দাবি, অভিযোগকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, বিজয়নগর উপজেলার বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি দলবেঁধে ভোট দিতে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। আমি ভোট দিতে গেলে কেন্দ্রের বুথে থাকা প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়ার বোন ও স্ত্রীর সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা আমাকে লাঞ্ছিত করে। বিজয়নগরের জনপ্রতিনিধিরা ভোটকেন্দ্রের বুথে দলবেধে প্রবেশ করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সিংগারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রকাশ্যে বলতে থাকেন তিনি তালা প্রতীকে ভোট দিবেন। অনেকে এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। পরে ওই জনপ্রতিনিধিরা বাইরে গেলে ধাওয়ার শিকার হন। তাদের পক্ষ নিয়ে কিছু লোকজন এলে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

Advertisement

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, ভোটকেন্দ্রের সীমানার বাইরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে ভোট দিতে না পারার অভিযোগ সঠিক নয়।

আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/এমকেএইচ