শেয়ারবাজার লুণ্ঠনের রাজারা আওয়ামী পরিবারের সদস্য মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
Advertisement
তিনি বলেছেন, ‘দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারী হিসেবে যারা চিহ্নিত সেই আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে দাবি পেশ করে লাভ কী? আমি ঠিক বুঝতে পারি না? আমি আজকে দীর্ঘদিন পার্লামেন্টে, প্রেস ক্লাবের রাস্তায়, রাজপথে সব নেতার বক্তব্য শুনি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বক্তব্য শুনি, বিএনপি নেতাকর্মীদের বক্তব্য শুনি। কিন্তু আমার বিবেকের কাছে আমি একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই না, এই গরিবের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিচার হয় না কেন?’
তিনি বলেন, ‘একদিনে যে দেশে তিন হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে লুণ্ঠন হয়ে যায়, সেখানে সরকার নিশ্চুপ কেন? আমি বুঝতে পারি না? বসে থাকার কারণ একটাই, কারণ তারা কোনো আইনকে তোয়াক্কা করে না, তারা গণতন্ত্রকে তোয়াক্কা করে না, বিরোধীদলকে তোয়াক্কা করে না। তারা বিরোধীদলকে সমাবেশ করতে দেয় না। এরা পুলিশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সরকার।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত ‘শেয়ার বাজার লুটের প্রতিবাদে’ এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
সরকারের সমালোচনা করে ফারুক বলেন, ‘এরা তো আইনের শাসনের সরকার নয়, তারা তো রাতের ভোটে সরকার। তারা বিনা বিরোধীদলের সরকার। যে সরকার বালিশ লুণ্ঠন করে, তোষকের টাকা লুণ্ঠন করে, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় না, তারা বিদ্যুতের দাম বাড়ালেই বা কি গ্যাসের দাম বাড়ালেই বা কি, কোনো কিছুই আসে যায় না। কারণ, তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই।
শেয়ারবাজার লুণ্ঠকারীদের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ফারুক বলেন,‘ আজকে যিনি (খালেদা জিয়া) মাত্র দুই কোটি টাকা আত্মসাতের কাল্পনিক মামলায় পিজি হাসপাতালের একটি ছোট্ট রুমে চিকিৎসাধীন। ক্ষমতায় থাকার সময় এই নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আমার দলের কেউ যদি এই গরিবের টাকা লুণ্ঠনের দায়ে অভিযুক্ত থাকে, আমাকে তার তালিকাটি দিন, আমি তাদের দল থেকে বের করে দেব। তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করব।’
সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন,‘জনগণ আপনাদের কাছে জিম্মি নয়। কিছু প্রশাসনের কাছে জিম্মি। তাই জনগণের দাবি নিয়ে আমাদের রাজপথে নামতে হবে। কারণ, এই দাবি শুধু বিএনপি নয়, শেয়ারবাজারের টাকা খুইয়ে যারা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তাদের দাবি । এই দাবি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে কোনো লাভ নেই। যারা শেয়ারবাজার লুণ্ঠন করেছে, তারা এখনও বহাল তবিয়তে জাতীয় সংসদের সদস্য, তারা বহাল তবিয়তে ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি চালায়।
শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,‘জনগণের টাকা নিয়ে যারা হোলি খেলা খেলছে, কেন তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না? আপনি তাদের দল থেকে বের করে দিয়ে প্রমাণ করুন, আপনার সরকার বালিশের দ্বিগুণ দাম নেয় না, শেয়ারবাজার লুণ্ঠনকারীরা আপনার দলের নয়। সেটি আপনি দেখাবেন না। কারণ, জনগণের ভোটে আপনি নির্বাচিত নন। জনগণের কাছে তো আপনার দায়ী নন। কারণ, জনগণ আপনাকে ভোট দেয় নাই।
Advertisement
সংগঠনের সভাপতি কে এম রফিকুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের প্রচার সম্পাদক গোলাম সরোয়ার সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, কৃষক দলের সদস্য মিয়া মো. আনোয়ার,মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/জেডএ/এমকেএইচ