পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও রাজবাড়ীর নিম্নাঞ্চলে বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ কমেনি। নদী তীরবর্তী কালুখালী, রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের চলাফেরা, খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গবাদি পশুর খাবারের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
Advertisement
এদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন আতঙ্ক। ভাঙন কবলিত বিভিন্ন স্থানে জরুরি ভিত্তিতে ২৫০ কেজি ওজনের বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এছাড়া পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাস্তা-ঘাট, ধান, পাট ও বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেতের। এদিকে পদ্মায় পানি কমতে শুরু করলেও আজও গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ও পাংশার সেনগ্রাম গেজ স্টেশন পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসন ও পাউবো সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পাউবো জানিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার এবং পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার কমে ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
Advertisement
জানা গেছে, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বাঁধের বাইরে থাকা জেলার কালুখালীর রতনদিয়া, কালিকাপুর, সদরের মিজানপুর, দাদশী, বরাট ও গোয়ালন্দের ছোটভাকলা, দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এ কারণে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, মানুষ, ও গবাদি পশুর খাবারের সংকট। বন্যায় এসব এলাকার ৯৩৫ হেক্টর ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে ত্রাণ সহায়তা দেয়া শুরু করেছে। তবে এখনও অনেক পানিবন্দি মানুষ কোনো সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বন্যার কারণে বাঁধের বাইরে থাকা নিম্নাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছেন, ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চলের ৯৩৫ হেক্টর ফসলি জমি। তালিকা অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
রুবেলুর রহমান/এমএমজেড/জেআইএম
Advertisement