একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে রাজশাহী জেলা জজ আদালতে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবীর সরকারের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।
Advertisement
এদিকে সাঈদীর হাজিরা উপলক্ষে আদালতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সাঈদীকে একনজর দেখতে আদালতে ভিড় করেছেন উৎসুক জনতা।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে আদালত এলাকায় গিয়ে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেখা যায়। কোর্ট চত্বরে একটি থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করছে। একইসঙ্গে প্রচুর মানুষ দেখা যায় যারা সাঈদীকে একনজর দেখতে সেখানে ভিড় করেছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলায় হুকুমের আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
Advertisement
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করছেন ওই আদালতের এপিপি শিরাজী শওকত সালেহীন। আর আসামিপক্ষে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্যানেল এ মামলা লড়ছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আদালতে মামলার শুনানি চলছে।
গত এক সপ্তাহ ধরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে সাঈদীকে রাখা হয়েছে। কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। প্রথমে বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ গোপন রাখলেও কারাগারের বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়টি নজরে আসে সবার।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখল নিয়ে ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা। ওই সংঘর্ষে শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে খুন করে মরদেহ শাহ মখদুম হলের পেছনের ম্যানহলে ফেলে দেয়। ওই রাতে ছাত্রলীগের আরও তিন কর্মীর হাত-পায়ের রগও কেটে দেয় হামলাকারীরা।
পরদিন এ নিয়ে নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩৫ শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেক শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
Advertisement
পরে ওই মামলার হুকুমের আসামি করা হয় জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বেশ কয়েকজনকে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিজামী ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
২০১২ সালের ৩০ জুলাই নগরীর রাজপাড়া থানার তৎকালীন ওসি জিল্লুর রহমান মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে ফারুক হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘদিনেও মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/জেআইএম