চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নে গত এক মাসে পদ্মার ভাঙনে প্রায় শতাধিক বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হড়মা গ্রামের দেবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দ্রুত ভেঙে নেয়া হয়েছে। দেবীনগর ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য শাহনাজ পারভিন জাগো নিউজকে জানান, হড়মা গ্রামের তিনটি পাড়ার মধ্যে নামো হড়মা, দানেশ মন্ডলের টোলা ও সোলেমান মন্ডলের টোলার ৫০টি বাড়ি গত ১০দিনের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে দানেশ মন্ডলের টোলার জামে মসজিদ। হড়মা গ্রামের নদী তীরে বসবাসকারী মৃত আব্দুল বাসিরের স্ত্রী নাজিরা বেগম (৫০) জাগো নিউজকে বলেন, ভয়ে ঘুম আসে না। জেগে বসে থাকি নদীর ধারে। না জানি রাতের মধ্যেই ভিটামাটি নদীতে চলে যাবে। আসবাবপত্র মানুষের বাড়িতে সরিয়ে রেখেছি। দেবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহজাহান আলী জাগো নিউজকে জানান, গত ১০ বছর আগে নদী ছিল প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। এলাকার শত শত পরিবার একাধিকবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। জমিজমা-ভিটামাটি হারিয়ে সহায় সম্বলহীন হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। গত দু`বছরের ভাঙনে পূর্ব ছয়রশিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, হড়মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি মাদরাসা ও ১১টি মসজিদ নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে একটি হাট (হড়মা হাট)। তারা অভিযোগ করে বলেন, ভাঙন থেকে এলাকা রক্ষা প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে চলছে। বাকি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চাঁপাইনবাবগঞ্জের সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ২৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২.৭ কিলোমিটার ‘পদ্মা নদীর ভাঙন হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলাতুলি এলাকা রক্ষা’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১২-১৩ অর্থবছরে। তিনি আরো বলেন, এর মধ্যে ৯০০ মিটারের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ৩৫৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্লক তৈরির কাজ চলছে। মরা পদ্মার মুখ থেকে ভাটিতে হড়মা গ্রাম পর্যন্ত ১৭৫০ মিটার কাজের দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে।এসএস/পিআর
Advertisement