‘বিমানের ৪৫ হাজার টিকিট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হরিলুট’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
প্রতিবাদে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করে, সংবাদটি তাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। তথ্যগত বিভ্রাটে পরিপূর্ণ সংবাদটি সম্পর্কে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিম্নরূপ-
ক) বিমানে কর্মরত বর্তমান/অবসরপ্রাপ্ত স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের টিকিট প্রাপ্যতা একটি ট্রেড ফ্যাসিলিটি।
খ) প্রশাসনিক আদেশ নং ১৩/৯৮, ২২/২০০০ এবং ২২/২০১৩ অনুসারে চাকরির সময়সীমার মধ্যে প্রকারভেদে বিমানের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ বিভিন্ন রেয়াতি টিকিট প্রাপ্য হন, যাকে আইডি টিকিটও বলা হয়।
Advertisement
গ) বিমানের ১১৫তম বোর্ড সভার অনুমোদনক্রমে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে একজন কর্মকর্তা/কর্মচারী নির্ভরশীলসহ বছরে সর্বোচ্চ ২০ (বিশ)টি প্যাসেজ বা টিকিট প্রাপ্য হবেন। অর্থাৎ নীতিমালা অনুসারে শুধুমাত্র স্বামী/স্ত্রী, সন্তান এবং নির্ভরশীল পিতা/মাতা এর অন্তর্ভূক্ত।
ঘ) বিমানের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ আইডি টিকিটের ক্ষেত্রে চাকুরীর ১ বছর পূর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয় বছর হতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ৮৫%, ৯০%, ৯৫% এবং ১০০% রেয়াতি হারে টিকেট প্রাপ্য হন। তবে এ সকল টিকিট নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক বিভাগের এডমিন শাখা কর্তৃক প্রক্রিয়া করার পর এবং যথাযথ কর্র্র্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমেই ইস্যু হয়ে থাকে। রেয়াতি টিকেটেও অবশ্যই প্রচলিত সকল ট্যাক্স বিমান এমপ্লয়ীদের পরিশোধ করতে হয়।
ঙ) বিমানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাপ্য যে কোন রেয়াতী টিকিটের চাইতে নিয়মানুযায়ী রেভিনিউ টিকিটধারী যাত্রীই সবসময় অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ রেভিনিউ প্যাসেঞ্জার কর্তৃক ফ্লাইট পূর্ণ (Full flight) থাকলে কখনই রেয়াতী টিকিটধারী কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ সেই ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারেন না।
বিমান কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ প্রশাসনিক আদেশ অনুযায়ী এবং সকল নীতিমালা অনুসরণ করেই প্রাপ্যতা অনুযায়ী রেয়াতী টিকিট ব্যবহার করেন।
Advertisement
অতএব, সংশ্লিষ্ট সংবাদটি বিভ্রান্তিকর, অসত্য, ভিত্তিহীন এবং অসংগতিপূর্ণভাবে প্রকাশের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার ভামূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় ব্যাখ্যা/প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
গত ২২ জুলাই সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ‘বিমানের ৪৫ হাজার টিকিট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হরিলুট’ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মো. আসলামুল হক, তানভীর ইমাম, আনোয়ার হোসেন খান ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার।
কমিটির ওই বৈঠকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৪৫ হাজার টিকিট হরিলুট প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সেখানে উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া আগামীতে টিকিট নিয়ে কমিশনবাণিজ্য বন্ধের সুপারিশও করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য যেহেতু বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত থেকে সংগৃহীত, সেহেতু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের আনীত ‘বিভ্রান্তিকর, অসত্য, ভিত্তিহীন ও অসংগতিপূর্ণ’ অভিযোগগুলো যুক্তিসঙ্গত নয়।
এমএআর/এমএস