গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। নেতা নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে আজ বুধবার তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। তবে যুক্তরাজ্য বাদেও একসময়ের মার্কিন নাগরিক বরিস জনসনের পূর্বপূরুষ তুর্কি মুসলিম বলে জানা গেছে।
Advertisement
শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী নয় রাজধানী লন্ডনের মেয়র ছিলেন বরিস জনসন। সাবেক হতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে মতানৈক্যের জেরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। কিন্তু থেরেসা মেও বেক্সিট কার্যকরে ব্যর্থ হন। পদত্যাগ করেন দলীয় প্রধানের পদ থেকে। সেই সুযোগে প্রধানমন্ত্রী হলেন এক সময়ের আলোচিত সাংবাদিক জনসন।
নয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পুরো নাম আলেকজান্ডার বরিস দ্য ফেফেল জনসন। ১৯৬৪ সালের জুনে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় জনসন। তার শৈশব কেটেছে নিউইয়র্ক, লন্ডন ও ব্রাসেলসে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তার মার্কিন নাগরিকত্ব ছিল।
বরিস জনসনের মা শার্লট ফচেট ছিলেন একজন চিত্রশিল্পী। তিনি ১৯৬৩ সালে স্ট্যানলিকে বিয়ে করে তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। পরের বছর জন্ম হয় বরিস জনসনের। সেই সূত্রে বরিস জনসন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশের নাগরিকত্ব লাভ করেন।
Advertisement
আরও পড়ুন> ব্রিটেনের ট্রাম্প বরিস জনসন?
জনসনের বাবা স্ট্যানলি জনসন সে সময় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি শাস্ত্রে অধ্যয়নরত ছিলেন। মায়ের দিক থেকে জনসন ব্রিটেনের রাজা দ্বিতীয় জর্জের বংশধর হলেও পৈত্রিক সূত্রে তার শেকড় রয়েছে তুরস্কে। কেননা তার প্র-পিতামহ অর্থাৎ তার দাদার বাবার নাম আলী কামাল। তিনি ছিলেন তুর্কি মুসলিম।
জনসনের প্র-পিতামহ আলী কামাল বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ছিলেন সাংবাদিক। তারপর রাজনীতিতে যোগ দেন। অটোমান সাম্রাজ্যের (ওসমানীয় খেলাফত) শেষের দিকে খুব কম সময়ের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ১৯২০ এর দশকে আলী কামাল গণপিটুনিতে নিহত হন। প্র-পিতামহের মতো বরিস জনসনও সাংবাদিকতা থেকে রাজনীতি এসেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় জনসনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের ৭৭তম প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আমি বরিস জনসনকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমা আশা করছি, তিনি তার নতুন এই দায়িত্ব সফলভাবে পালন করবেন। আমি বিশ্বাস করি, এই নতুন যুগে ব্রিটিশ-তুর্কি সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’ বাবার সূত্রে তার বংশের ইতিহাস জানতে এবং স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বরিস জনসন একবার তুরস্কে গিয়ে বেশ কিছুদিন ছিলেন বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া বরিস জনসন নিজেও মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যেই তার মুসলিম সংশ্লিষ্টতার কথা বলেন।
Advertisement
এসএ/এমএস