জাতীয়

নদীর তীরে ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়েসহ অবকাঠামো নির্মাণ শুরু

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) গৃহীত নদীর তীরে চলমান উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে টাস্কফোর্স কমিটি। কমিটি উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম অব্যাহত রাখারও আহ্বান জাানিয়েছে।

Advertisement

বুধবার (২৪ জুলাই) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা এবং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান, সুপারিশ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় এ তথ্য জানানো হয়। নৌ প্রতিমন্ত্রী ও টাস্কফোর্সের সভাপতি খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান এবং তা চলমান থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কার্যক্রম ভূমিকা রাখবে। উচ্ছেদ কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তার জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

সভায় জানানো হয়, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর উচ্ছেদকৃত তীরে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১০,৮২০টি সীমানা পিলার, বনায়ন, তিনটি ইকোপার্ক, ছয়টি পন্টুন, ৪০ কিলোমিটার কি-ওয়াল, ১৯ আরসিসি জেটি, ৪০ স্পার্ড ও ৪০৯টি বসার বেঞ্চ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে, যা ২০২২ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এ বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ৫,২৩৯ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে ঢাকার চারপাশে নদীর তীরভূমির প্রায় ১৪৫.১ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় নিলামের মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪০০ টাকা এবং জরিমানার মাধ্যমে ২৭ লাখ ৬ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।

Advertisement

সভায় জানানো হয়, বিআইডব্লিউটিএ ২০১০-২০১৯ পর্যন্ত নদীর তীরের সীমানা চিহ্নিতের লক্ষ্যে ৯,৫৭৭ সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩,৮৫৫ পিলার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত ২,১১৪ পিলারের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬১২.২২ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩৭৮.৬২ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ২৩৩.৬০ একর জমি রয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১৫,৫৯২ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২,৪৭৮ এবং নারায়ণগঞ্জে ৩,১১৪টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।

সারা দেশের অভ্যন্তরীণ নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে সাতটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশের নদী খনন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। খাগদোন, বিষখালী, কীর্তনখোলা, যাদুকাটা, রক্তি, রকশোনালা, কর্ণপাড়াখাল, লোহালিয়া, মনু, পিয়ান, আড়িয়াল খাঁ, ইছামতি, তালতলাখাল, পালং, নড়িয়াখাল, পুরাতন দুবালদিয়া, শীতলক্ষ্যা, কালিগঙ্গা, শৈদাহ, গাঘর, মধুমতি, কাচিকাটাখাল, পাড়কোনা, তুরাগ, কুমার, ধলেশ্বরী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, তিতাস, কংস, বাউলাই, সুরমা, মগড়া, পাগলা, বুড়ি, ভোগাই-কংস, নতুনডাকাতিয়া, বাঁকখালী, ভৈরব, আত্রাই, ভোলা, পালরদি, কর্ণতলী, পদ্মা, মেঘনা, গাবখানখাল, কর্ণফুলী নদী চ্যানেল, পশুর নদী চ্যানেল, কাজল-তেতুলিয়া নদীতে খনন কাজ চলমান রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, নৌ সচিব মো. আবদুস সামাদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এইউএ/এএইচ/এমএস

Advertisement