আন্তর্জাতিক

কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকারের পতন

দীর্ঘ অচলাবস্থার পর অবশেষে ভারতের কর্ণাটকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ভেঙ্গে গেল। আজ মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমরাস্বামীর সরকার আস্থা ভোটে হেরে গেলে সরকার ভেঙে দেন স্পিকার। এরপর গভর্নরের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিধানসভায় আস্থা ভোটে কংগ্রেসের জোট সরকারের পক্ষে পড়েছে ৯৯টি অপরদিকে ১০৫টি ভোট পড়েছে বিজেপির পক্ষে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ১৬ জন বিধায়ক পদত্যাগ ও সরকার থেকে দুজন স্বতন্ত্র বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়ার ফল এই ভোট।

গত সপ্তাহ থেকেই আস্থা ভোট হবে হবে করেও হচ্ছিল না কর্ণাটক বিধানসভায়। মঙ্গলবার আস্থা ভোটের আগে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন কংগ্রেস ও বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। দুজন নির্দলীয় বিধায়ককে জোট সরকারের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কংগ্রেস।

মুখ্যমন্ত্রী এএইচডি কুমারস্বামী বলেন, বিশেষ করে এই বিতর্কের শেষ নিয়ে চিন্তিত নন তিনি। আবেগপ্রবণ হয়ে কুমারস্বামী বলেন, এসবের থেকে, তিনি খুশি মনে ছেড়ে দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমি সৌজন্যের সঙ্গে কাজ করেছি। শেষ ১৪ মাসে তারা থাকবে না যাবে এই অবস্থা ছিল। আমি আমার দলের নেতাদের ধন্যবাদ জানাই সবকিছুর সঙ্গে থাকার জন্য।’

Advertisement

আস্থা ভোটের জন্য সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত সময়সীমা দেয়া হলেও বিতর্কের সময় ট্রেজারি বেঞ্চ ফাঁকা থাকতে দেখে দুঃখের সঙ্গে বিধানসভার স্পিকার কে আর রমেশ কুমার বলেন, ‘এটাই কি অধ্যক্ষ বা বিধানসভার ভাগ্য ছিল? এরপরেই কুমারস্বামী বলেন, ‘আপনি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন, নিজের ক্ষমতা ছাড়ুন।’

কর্ণাটকের গভর্নর বাজুভাই বালার কাছে পদত্যাগ পত্র দিচ্ছেন মুখমন্ত্রী এইচডি কুমারাস্বামী

গত কিছুদিন ধরে কার্যত ‘রাজনৈতিক নাটক’ চলছিল কর্ণাটকে। একাধিক বিধায়ক পদত্যাগ করলেও পদত্যাগপত্র প্রথমে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান স্পিকার। কিন্তু তারা তাদের অবস্থানে অনড় থাকেন। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে মঙ্গলবার হয় আস্থা ভোট।

২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রদেশের মোট ২২৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পায় ৮০টি এবং বিজেপি পায় ১০৫টি আসন। তবে ধর্মনিরপেক্ষ জনতা দলের (জেডিএস) ৩৭ জন এবং বহুজন সমাজ পার্টির ১ জন বিধায়ককে নিয়ে জোট করে সরকার গঠন করে কংগ্রেস।

Advertisement

সরকার গঠন করলেও প্রথম থেকেই জোট শরিকদের মধ্যে মতৈক্য ছিল না। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হন জনতা দলের এইচ ডি কুমারাস্বামী। তবে লোকসভায় কর্ণাটকে বিজেপি দারুণ সফলতা পায়। মোট ২৬ টি লোকসভা আসনের মধ্যে তারা জয়ী হয় ২৪টিতে। আর কংগ্রেস এবং জনতা দল একটি করে আসন পায়। তারপর থেকেই প্রদেশে সরকার গঠনের চেষ্টা শুরু করে বিজেপি।

গত লোকসভা নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বার দলের ভরাডুবি। সভাপতি রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করেছেন। আর এর মধ্যেই এলো এমন দুঃসংবাদ। কংগ্রেসের এমন অবস্থার সুযোগে ক্ষমতাসীন বিজেপি কর্ণাটক প্রদেশে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। প্রথম থেকেই এই অচলাবস্থার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে আসছে কংগ্রেস।

Karnataka Governor, Vajubhai Vala accepts HD Kumaraswamy's resignation. pic.twitter.com/AVuD082In4

— ANI (@ANI) July 23, 2019

এসএ/জেআইএম