আইন-আদালত

পাস্তুরিত দুধের তিন প্রতিবেদন হাইকোর্টে

বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে আদালতের আদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ল্যাবরেটরি, আইসিডিডিআর’বির ল্যাবরেটরি এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (সাভার) ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।

Advertisement

চারটি ল্যাবের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হলেও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন এখনও আসেনি।

এদিকে দুধ নিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা করা প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেছেন আদালত।

এসব প্রতিষ্ঠানের সব প্রতিবেদন আগামীকাল বুধবার এফিডেভিট (হলফনামা) আকারে জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক।

Advertisement

দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান আছে কি না- জানতে চেয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ বিএসটিআইয়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও তার সঙ্গে ছিলেন মো. তানভীর আহমেদ।

এর আগে সকালে দুধের বিষয়ে তিন প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা হয়। পরে প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।

গত ১৪ জুলাই বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নেয়া অনুমোদিত পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে চারটি ল্যাব প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওসব ল্যাবে দুধের অ্যান্টিবায়োটিক, ডিটারজেন্ট, এসিডিটি, ফরমালিন ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি আছে কি না- তা পরীক্ষার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ওই প্রতিবেদন পৃথকভাবে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছিল।

Advertisement

পরে ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেছিলেন, দুধ পরীক্ষার জন্য বিএসটিআইতে ৯টি প্যারোমিটার রয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে যে পরীক্ষা হয়, সেখানকার ল্যাবে ১৯টি প্যারোমিটার আছে। আমি আজ (১৪ জুলাই) আদালতে বাইরের কয়েকটি দেশের দুধের মান নির্ধারণের উদাহরণ তুলে দেখিয়েছি, তারা দুধ পরীক্ষায় ৩০ ধরনের প্যারোমিটার ব্যবহার করেন।

এদিকে দুধের মান পরীক্ষার জন্য বিএসটিআই একটি কমিটি করেছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে ওই কমিটি গঠিত হলেও তারা গত সাত মাসে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। সব বিষয়ে আদালত শুনানি নিয়ে পাস্তুরিত দুধের পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষণা প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে থাকা ৭৫ শতাংশ পাস্তুরিত দুধেই ভেজাল ধরা পড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি।

এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ। পরে গত বছরের ২১ মে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কমিটি করে বাজারে থাকা পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এফএইচ/জেডএ/এমএস