সন্তান সম্ভবা এক নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় এক যুবক পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি তার স্বামী। শিশুর জন্মের পরদিন অন্য এক যুবক এসে দাবি করেন, তিনি সদ্যোজাত ওই শিশুর বাবা। এখানেই শেষ নয়, তার পরদিন আরও এক যুবক এসে দাবি করে বসেন, তিনিও শিশুটির বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতায়।
Advertisement
ঘটনার শুরু গত শনিবার। কলকাতার বাঘা যতীন এলাকার গাঙ্গুলি বাগানের ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তিন দিনে আসা ‘তিন বাবা’ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। বিষয়টির সমাধান করতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয়। শিশুটির বাবার পরিচয় নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গত শনিবার দীপঙ্কর পাল নামে এক ব্যক্তি স্বপ্না মিত্র নামে এক নারীকে নিজের স্ত্রী পরিচয়ে ভর্তি করেন গাঙ্গুলি বাগানের ওই নার্সিংহোমে। সন্তান সম্ভবা ওই নারী রোববার বাচ্চা প্রসব করেন। তার সঙ্গে একজন প্রৌঢ়াও ছিলেন যিনি নিজেকে স্বপ্নার মা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।
পুলিশ বলছে, শিশুটির জন্ম পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু রোববার বিকেলে হর্ষ ক্ষেত্রী নামে এক যুবক হাসপাতালে সদ্যোজাতকে দেখতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনিও নিজেকে ওই শিশুর বাবা বলে পরিচয় দেন। স্বপ্না নামের ওই নারীর সঙ্গে বিয়ের কাগজপত্র দেখান তিনি।
Advertisement
যুবকের এমন কথা শুনে হকচকিয়ে যান হাসপাতালের কর্মীরা। তারা ওই যুবককে ঢুকতে না দিয়ে পুলিশে খবর দেন। এ ছাড়া নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ, আসন্ন সমস্যার কথা বিবেচনা করে ওই নারীর কেবিনের সামনে নিজেদের দুজন নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েন করে ।
তবে এখানেই শেষে নয়, ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে গতকাল সোমবার বিকেলে প্রদীপ রায় নামের আরেক যুবক ওই নার্সিংহোমে গিয়ে দাবি করেন, স্বপ্না তার স্ত্রী। তিনিও তাদের বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখান।
বিষয়টি নিয়ে তুমুল হৈচৈ পড়ে যায় চারপাশে। দ্বিতীয় যে যুবক স্বপ্না নামের ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন তিনি স্থানীয় নেতাজিনগর থানায় আবেদন করে বলেন, স্বপ্না তার বিবাহিত স্ত্রী। দীপংকর পাল ও প্রদীপ রায় নামের অপর দুই যুবক ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সন্তানের দাবি তুলেছেন।
পুলিশ বলছে, স্বপ্নাকে জিজ্ঞাসা করে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। স্বপ্না সুস্থ হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে সদ্যোজাত ওই শিশুর বাবা প্রকৃতপক্ষে কে। শিশুকন্যার বাবার দাবি নিয়ে হাসপাতালে তিনজনের হাজির হওয়ার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Advertisement
এসএ/এমএস