বিনোদন

সংসার বাঁচাতে দারোয়ানের চাকরি করছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা

জীবনের কী নির্মম পরিহাস। সংসার বাঁচাচে চলচ্চিত্র নির্মাতাকে নিতে হলো বাড়ির দারোয়ানের চাকরি। নতুন গল্প ও চিত্রনাট্যে ডুবে একেকটা দিন কাটাতেন যে মানুষটি তাকে এখন ১২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতে হয়। ৬২ বছর বয়সী এই চলচ্চিত্র পরিচালকের নাম সুব্রত রঞ্জন। টালিউডের অনেকেই তাকে চেনেন। তার পরিচালিত ‘প্রবাহিনী’ নামের একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর টোকাইদের জীবনের গল্প নিয়ে তিনি নির্মাণ করেন ‘কলি’ নামের একটি চলচ্চিত্র। এখনো আলোর মুখ দেখেনি চলচ্চিত্রটি।

Advertisement

সুব্রত এখন নিজেই যেন কোনো একটি চলচ্চিত্রে চরিত্র। চলচ্চিত্রের কাজ না পেয়ে ছেলে-মেয়েদের মুখে খাবার তুলে দিতে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার টাকা বেতনের চাকরি করছেন।

এই নির্মাতার সোনালী অতীতের দিকে তাকালে দেখা যায়, আশির দশকে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ চলচ্চিত্রে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর সহকারী পরিচালক হিসেবে অনেক ছবিতে কাজ করেছেন। মুম্বইয়ে শশধর মুখোপাধ্যায়ের প্রোডাকশন হাউসেও কাজ করেছেন তিনি।

ভারতীয় এক গণমাধ্যমের কাছে সুব্রত বলেছেন, ‘এখনো সুযোগ পেলেই চিত্রনাট্যের খসড়া তৈরি করি। যদিও এই চাকরি করে সময় বের করা কঠিন হয়ে যায়। মনটা আসলে টালিপাতাতেই পড়ে আছে। সময় বের করে কাজের খোঁজে সেখানেও ছুটে যায়। সংসার তো চালাতে হবেই, বেশ কয়েক বছর বসে থেকে শেষ এই কাজেই ঢুকে গেছি। কোনো কাজই আসলে ছোট নয়।’

Advertisement

সুব্রতর নতুন পেশার খবর টালিউডের অনেকেই জেনে গেছেন। অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না বিষয়টি। ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল দে বলেন, ‘সুব্রতবাবু টালিগঞ্জের পরিচিত মুখ। এখন যাদের হাতে ক্ষমতা, তাদের দলের লোকজনই শুধু কাজ পায়। সুব্রতর মতো অভিজ্ঞ মানুষেরা কাজ পান না। এতে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির দৈন্য দশাই ফুটে উঠছে।’

এত কিছুর পরেও সুব্রত স্বপ্ন দেখেন, ভালো কাজের সুযোগ আসবে তার। আবারও ঘুরে দাঁড়াবেন তিনি। আবারও নতুন ছবি উপহার দিবেন দর্শকদের।

এমএবি/এলএ/পিআর

Advertisement