বিনোদন

আমদানি করা দেব-জিৎও ফ্লপ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তি পাওয়া শাকিব খান অভিনীত ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি টানা কয়েক সপ্তাহ চলেছে সিনেমা হলে। ঈদের ছবির রেস যখন কাটতে শুরু করেছে সেই মুহূর্তে গত ৫ জুলাই মুক্তি পায় নিরব অভিনীত ‘আব্বাস’। মুক্তির প্রথম সপ্তাহে বেশ সাড়া ফেলে ছবিটি।

Advertisement

এরপর হলে আবারও তৈরি হয় দেশি ছবির শূন্যতা। আব্বাস মুক্তির পরের সপ্তাহে কোনো দেশি সিনেমা আলোর মুখ দেখেনি। তবে ১৯ জুলাই জিতের ছবির পাশাপাশি মুক্তি পেয়েছে একটি দেশি ছবি। এই ছবিটির নাম ‘অনুপ্রবেশ’।

সাংবাদিক, লেখক ও চলচ্চিত্রকার তাপস কুমার দত্ত নির্মাণ করেছেন ছবিটি। এতে অভিনয় করেছেন ভারতের বিখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আরও আছেন বাংলাদেশের পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আলতাফ হোসেন, অলিউল হক রুমী, আনোয়ার সায়েম ও সানজিয়া ইসলাম। ছবিটির দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রূপঙ্কর ও শুভমিতা। নির্মাতা তাপস কুমার দত্ত জানালেন, দর্শক দেখছে তার ছবিটি।

তবে বিদেশি দুই সিনেমা নিয়ে হতাশ সিনেমা হলের মালিকরা। হল বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই বিদেশি ছবি আমদানি করে মুক্তি দেওয়ার পক্ষে কথা বলেছেন হল মালিকরা। সাফটা চুক্তি মেনে ছবি আমদানি করে মুক্তিও দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, আমদানি করা ছবি কি সিনেমা হলে দর্শক টানতে পারছে?

Advertisement

গত ঈদের আগেই দুটি ভারতীয় বাংলা ছবি আমদানি করেছিলেন বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া। এর মধ্যে দেব-রুক্মিণী অভিনীত ‘কিডন্যাপ’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল গত ১২ জুলাই। মোটেও দর্শক টানতে পারেনি সিনেমাটি। এরপর ১৯ জুলাই মুক্তি পেয়েছে জিৎ-কোয়েল অভিনীত ‘শুরু থেকে শেষ’ ছবিটি। এ ছবিরও তেমন সাড়া শব্দ নেই।

এর আগের বেশকিছু ভারতীয় হিন্দি ও বাংলা সিনেমা মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা হলে। কিন্তু দেখা গেছে, দেশের হলে বিদেশি ছবি বারবারই ফ্লপ হয়েছে।

রোববার বিকেলে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও মধুমিতা হলের মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া দেবের ছবিটি দর্শক দেখতেই আসেনি। দেবকে আসলে বাংলাদেশের দর্শকরা চেনে না। দেবের ছবি এখানে চলে না। এ সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে জিৎ-কোয়েলের সিনেমা। আমার হলেও মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। খুব ভালো চলছে না এটাও। দেবের তুলনায় কিছুটা বেশি দর্শক দেখছে জিতের ছবি।’

ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ আরও বলেন, ‘সাফটা চুক্তির আওতায় যেসব ছবি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়, এ ছবিগুলো আগে কলকাতায় মুক্তি পায়। কলকাতা ও বাংলাদেশে একই সঙ্গে যদি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হতো তাহলে হয় তো বেশি দর্শক পাওয়া যেত। বড় আশা করে ছবি আমদানি করে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমদানিকারকরা।’

Advertisement

লক্ষ্য করলে দেখা যায় গত বছরের জুলাই-আগস্টে মুক্তি পেয়েছিল তিন ভারতীয় বাংলা ছবি ‘সুলতান’, ‘ভাইজান এলো রে’ ও ‘ফিদা’ ঢাকাই সিনেমার বাজারে সুবিধা করতে পারেনি সেই ছবিগুলো। বাংলাদেশের দর্শক কলকাতার ছবি সাধারণত জলসা মুভিজ কিংবা জি বাংলা সিনেমা টিভি চ্যানেলে দেখে। দেশের দর্শক হলে গিয়ে দেখতে চায় না ভারতের ছবি।

তাহলে হলে দর্শক ফিরবে কীভাবে? দেশের সিনেমাপ্রেমীরা মনে করেন, সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে ভালো দেশি ছবির প্রয়োজন। ভালো ছবি মুক্তি পেলে দর্শক হলমুখী হয়, এর প্রমাণ পাওয়া গেছে অনেকবার। এদেশের দর্শকই ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিকে সুপার হিট করেছেন। সর্বশেষ শাকিব খানের ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিও দেখেছে দেশের দর্শক। সিনেমাপ্রেমীদের মনের কথা কথা হলো, ‘ভালো দেশি ছবি চাই, দেশের ছবির বিকল্প নাই।’

এমএবি/এলএ/পিআর