মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলায় স্ত্রীকে হারানো সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর মিরেরচর গ্রামের ফরিদ আহমেদও ছিলেন।
Advertisement
গত ১৭ জুলাই আধা ঘণ্টার ওই বৈঠকে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিজেদের ধর্মীয় স্বাধীনতার অভিজ্ঞতার কথা জানতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন : ক্রাইস্টচার্চে নিহত ২ বাংলাদেশির লাশ দেশে পৌঁছেছে
ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনায় ভাগ্যক্রমে ফরিদ আহমেদ বেঁচে গেলেও তার স্ত্রী হোসনে আরা আহমেদ নিহত হয়েছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে পেছন থেকে গুলিবিদ্ধ হন ৪২ বছর বয়সী হোসনে আরা।
Advertisement
ওই বৈঠকে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশি ফরিদ আহমেদ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরেক বাংলাদেশি প্রিয়া সাহা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কে প্রিয়া সাহা নালিশ করলেও নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার বিষয়ে কোনো নালিশ করলেন না ফরিদ।
আরও পড়ুন : ক্রাইস্টচার্চে হামলায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া, নীরব ট্রাম্প
উল্টো নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার পর সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া ও বিশ্বব্যাপী সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ফরিদ আহমেদ।
ওই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ফরিদ আহমেদ বলেন, আপনি সত্যিই একজন মানবতাবাদী একজন বিশ্ব নেতা। আজ আমাকে আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ।
Advertisement
আরও পড়ুন : প্রিয়া সাহার বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহ বলে মনে করেন না আইনমন্ত্রী
ওই সময় ওভাল অফিসের বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মানুষ যদি স্বাধীনভাবে ধর্মীয় চর্চা করতে না পারে তখন তার সব ধরনের স্বাধীনতাই ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। আমার মতো অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট ধর্মীয় স্বাধীনতাকে এতো গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন না বলেও জানান ট্রাম্প।
ওই সময় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আপনাদের অনেক দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এটি কাম্য নয়।
আরও পড়ুন : রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে প্রিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলা
ট্রাম্পকে বলা বাংলাদেশি ফরিদের বক্তব্যের বিষয়ে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেন, ফরিদ আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেয়ায় অবাক হইনি আমি। ওই বৈঠকে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলার ভয়াবহ স্মৃতিচারণ করার কথা ছিল তার। কিন্তু তিনি তা করেননি।
আরও পড়ুন : এবার প্রিয়া সাহা নিয়ে মুখ খুললেন জয়
জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেন, ফরিদ একজন ভালোবাসার ও সহানুভূতি সম্পন্ন মানুষ। তার প্রতিটা আলাপ থেকে তা বেরিয়ে আসে। কাজেই দেশের বাইরে গিয়েও তিনি তেমনটা করবেন, সেটাই আমি ধরে নিয়েছিলাম। যে কারণে বিশ্বব্যাপী সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফরিদ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেয়ায় আমি অবাক হইনি। ফরিদ আহমেদ এমন একজন মানুষ, যিনি মানবতাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ফরিদ আহমেদ নিজেই। শারীরিক প্রতিবন্ধী ফরিদ আহমেদ বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
ছামির মাহমুদ/এএম/পিআর