দেশজুড়ে

জামালপুরে তীব্র ত্রাণ সংকট, ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ

জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। যমুনার পানি এখনও বিপৎসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি ছড়িয়ে পড়ছে সদর উপজেলার কেন্দুয়া, তুলশীরচর, লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে। পানিবন্দি রয়েছেন প্রায় ১৩ লাখ মানুষ।

Advertisement

এদিকে ১০ দিন ধরে যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় দুর্গত এলাকায় ত্রাণের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগ। বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন।

তাদেরই একজন ফুলমতি বেগম। তিনি জানান, এখানে আশ্রয় নেয়ার পর একদিন শুকনা রুটি, আরেক দিন শুধু খিচুড়ি ছাড়া কিছুই পাননি। কিন্তু সরকারি লোক এসে বলেছিল, আজ রুটি দিলাম, কাল খিচুড়ি দেব। চাল, ডাল সব দেব। শিশুদের জন্য আলাদা খাবার, আর গরুর জন্য আড়াই কেজি করে ভুষি দেব। কিন্তু আজ ৬ দিন ধরে এসব কিছুই আসেনি। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। যদি ডাক্তার এসে চিকিৎসা-ওষুধ দিত তাহলে কষ্ট করা লাগত না। তার মতো আরও অনেকেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করছেন।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. গৌতম রায় জানান, দুর্গত এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের মোট ৮০টি টিম কাজ করছে। তারা এই মুহূর্তে দুর্গতদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ডাইরিয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

Advertisement

এদিকে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে বন্দি থাকায় দুর্গত এলাকা ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। ফলে কোথাও ত্রাণ বিতরণের কথা শুনলেই, সেখানে ছুটে যাচ্ছেন বানভাসি মানুষেরা।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানিয়েছেন, নতুন করে ১৩০ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯৮০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যা দুর্গতদের মাঝে রুটি ও খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে।

আসমাউল আসিফ/এমএমজেড/এমএস

Advertisement