মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক খাইরুল দজাইমী দাউদ বলেছেন, ‘আগামী পহেলা আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ‘ব্যাক ফর গুড’ (বিফোরজি) কর্মসূচির অধীনে চার লাখ অবৈধ প্রবাসী তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবে।’
Advertisement
আত্মসমর্পণ করে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি পাওয়ার জন্য অবৈধদের নির্দিষ্ট কিছু নথি সরবরাহ করতে হবে। ১৯ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে দাতুক খাইরুল দজাইমী দাউদ এসব জানান।
আরও পড়ুন> ৬ মাসে সাগরপথে ইউরোপে গেছেন ১৯০ বাংলাদেশি
পরিচালক বলেছেন, ‘অভিবাসন বুথে আবেদন করার আগে তাদেরকে নিজ নিজ দূতাবাস থেকে একটি সম্পূর্ণ শনাক্তকরণ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।’
Advertisement
অভিবাসন প্রধান জানিয়েছেন যে, সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয়ার আগে তাদের ফ্লাইট টিকিটসহ আবেদনের সমস্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করা হবে।
এর আগে, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত এই কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে অভিবাসন বিভাগকে সহযোগিতা করবে রয়েল মালয়েশিয়া পুলিশ (পিডিআরএম)। বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূরণ বা সংগ্রহের জন্য দূতাবাস ও অভিবাসন কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অবৈধ অভিবাসীদের আটক করা হবে না।
বিফোরজি প্রকল্পের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, ‘শুধুমাত্র পিনিনসুলার মালয়েশিয়ার অবৈধ অভিবাসীরা এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে। যারা এরই মধ্যে আটক হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ সুযোগ কার্যকর হবে না।’
অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশকে হ্রাস করার পাশাপাশি দফতর পরিচালনার খরচ এবং অপরাধ সংক্রমের ঝুঁকি হ্রাস করা এ কর্মসূচির অন্যতম একটি লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন অভিবাসন মহা পরিচালক।
Advertisement
আগামী ১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই সুযোগ পাওয়ার পরও যারা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থান নেয়া হবে বলে ও জানান ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক।
এদিকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশ ত্যাগের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মালয়েশিয়াজুড়ে ৮০টি কাউন্টার খোলা হয়েছে। অবৈধ ব্যক্তিদের সরাসরি ইমিগ্রেশন অফিসে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে হবে। ১৮ জুলাই মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানশ্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের ইমিগ্রেশন আইনের ১৯৫৯/৬৩ পাসপোর্ট আইনের ১৫৫ ও ১৫ (১) সি ৬ (১) সি আওতায় অবস্থানকারীরা এই সুযোগ পাবেন।
এক্ষেত্রে আবেদনকারীর অরজিনাল পাসপোর্ট, যাদের পাসপোর্ট নেই, দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস, মালয় রিংগিত ৭০০ এবং যেকোনো বিমানের কনফার্ম একটি টিকিট। প্রতারণা থেকে সাবধান হতে এবং যেকোন এজেন্ট বা ভেন্ডরের সঙ্গে টাকা লেনদেন না করার জন্য বলা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, ২০১৮ সালের ৩০ আগস্টে থ্রি-প্লাস ওয়ান প্রকল্পে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৭৪ অভিবাসী নিজ দেশে ফেরত গেছেন বলে অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন একটি নোটিশ প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার সাবা সারোয়াক লাবুয়ান ব্যতীত অন্যান্য সব প্রদেশে কার্যকর হবে। এ কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য হাইকমিশন ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। যাদের যে তথ্য এবং ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা দ্রুত সরবরাহ করার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যেসব অবৈধ অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে প্রত্যাবর্তনে আগ্রহী তারা এই কর্মসূচির সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেছেন দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা।
এমআরএম/এমএস