শেরপুরে বন্যার পানিতে ডুবে তিন শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়ও এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বন্যার পানিতে ডুবে ওই তিন শিশুর মৃত্যু হয়।
Advertisement
নিহতরা হলো- সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের সাতপাকিয়া এলাকার খলিলুর রহমানের মেয়ে খুশি আক্তার (৬), চরমুচারিয়া ইউনিয়নের চরবাবনা এলাকার মোফাজ্জল মিয়ার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে শামীম মিয়া (৭) এবং শেরপুর পৌর এলাকার উত্তর গৌরীপুর মহল্লার নায়েব আলীর ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান (১৩)।
এছাড়াও চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের নতুন ভাগলগড় গ্রামের সামেদুল ইসলামের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে রুবেল হোসেন (১৩) দুপুরের পর থেকে বন্যার পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ সব মৃত্যু ও নিখোঁজের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আকবর হোসেন বলেন, বাড়িঘরের চতুর্দিকে বন্যার পানি। সেই পানিতে ডুবে দুপুরের দিকে সাতপাকিয়া এলাকায় এক শিশু নিহত ও নতুন ভাগলগড় এলাকায় আরেকজন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে দমকল বাহিনীর ডুবুরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
Advertisement
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গরপাা উত্তর গৌরীপুর মহল্লার মেহেদী তার বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পেছনে বন্যার পানিতে কলাগাছের তৈরি ভেলায় ঘুরতে যায়। ওই সময় হঠাৎ ভেলাটি উল্টে গেলে সাঁতার না জানায় ডুবে যায় মেহেদী। পরে তার বন্ধুদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে মেহেদীকে ভেলার নিচ থেকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে বন্যার পানির প্রবল চাপে সদর উপজেলার বেতমারি-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের বেতমারী এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের প্রায় ১০০ মিটার ভেঙে গেছে। এতে বেতমারী, চরখারচর, ঘুঘুরাকান্দিসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবারের বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বেড়িবাঁধের ভাঙন অংশ দিয়ে হু হু করে প্রবলবেগে পানি ঢুকছে। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
বেতমারি ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. হাফিজুর রহমান জানান, স্থানীয় লোকজন বাঁশবল্লি ও বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ইউপি চেয়ারম্যান ফোরাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম দলীয় নেতাকর্মীসহ বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অপরদিকে শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। এতে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান ও শিমুলতলি ডাইভারশনের ওপর দিয়ে প্রায় ছয় ফুট উচ্চতায় প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
Advertisement
পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টের পানি পরিমাপকারী মো. মোস্তফা মিয়া।
হাকিম বাবুল/আরএআর/এমএস