গেন্ডারিয়া কাঁচাবাজারে চেয়ার পেতে গোল হয়ে বসে অস্ত্রের বেচাকেনা চলছিল। গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় আরও ২/৩ জন পালিয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
Advertisement
শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টায় শ্যামপুর থানাধীন গেন্ডারিয়া কাঁচাবাজারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ৪টি বিদেশি পিস্তল, ২টি বিদেশি রিভলবার, ৭টি ম্যাগাজিন ও ১২৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো. রাজু গাজীর (৪৩) বাড়ি চাঁদপুর। মিনহাজুল ইসলাম (২৮) খিলগাঁও এলাকায় থাকেন। খিলগাঁও মডেল কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। আর শওকত হোসেনের (৩৮) বাড়ি টাঙ্গাইল।
শুক্রবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার(ডিসি) মো. ইব্রাহিম খান।
Advertisement
তিনি বলেন, গেন্ডারিয়া কাঁচাবাজারে একদল অস্ত্র ব্যবসায়ী অস্ত্র লেনদেন করতে পারে এমন সংবাদ আসে। এরপরই শ্যামপুর থানার ওসি মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে একটি মোবাইল টিম সেখানে পাঠানো হয়। আগ থেকে এসআই সোহাগ, এএসআই মাসুম বিল্লাহ ও কনস্টেবল মাহবুব ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। পৌনে ৯টার দিকে ওখানে কিছু লোক আসে, চেয়ারে বসে। একজন ব্যাগ থেকে অস্ত্র নিয়ে কোমরে গুজে। এ সময় ওই পুলিশ সদস্যরা তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পালানোর সময় রাজু গাজী পিস্তল বের করে এসআই মাহবুবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। সৌভাগ্যক্রমে গুলি বের হয়নি। একই সময়ে এএসআই মাসুম বিল্লাহ শওকতকে ঝাপটে ধরে। শওকতের ব্যাগ থেকে ৫টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে কনস্টেবল মাহবুব মিনহাজকে ঝাপটে ধরতে সক্ষম হন। অভিযানে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ২টি বিদেশি রিভলবার, ৭টি ম্যাগাজিন ও ১২৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে ডিসি ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা অস্ত্র কোথায় থেকে এসেছে, কী কাজে অস্ত্রগুলো নিয়ে আসা হয়েছে- তা জানার চেষ্টা করছি। তবে উদ্ধার করা সবকটি অস্ত্র ছিল লোডেট। তদন্ত শেষ করার পর অস্ত্রের যোগানাদাতা, অস্ত্রের উৎস জানা যাবে।
তিন কারণে আসতে পারে অস্ত্রগুলো
ডিসি ইব্রাহিম বলেন, সকালবেলায় তারা গেন্ডারিয়া এলাকায় আসে। তাদের হয়তো কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের উদ্দেশ থাকতে পারে। আবার অস্ত্র কেনাবেচার উদ্দেশও নিয়ে আসতে পারে। এমনও হতে পারে যে, অস্ত্রগুলো কাউকে ভাড়া দিতে নিয়ে আসা হয়েছিল। ঠিক কী উদ্দেশ, তা জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তে ও জিজ্ঞাসাবাদে স্পষ্ট হবে। তবে কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। ২/৩ জন পালিয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Advertisement
রাজু গাজীকে আগের রাতে গেন্ডারিয়া কাঁচাকাজারে আসতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। অস্ত্র হাতে দেয়ার পর একটি জায়গায় আরেকজনের কাছে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। তবে এমন কেউ পালিয়েছে যে সেই ব্যক্তি ও স্থানের নাম বলার আগেই পুলিশ গিয়ে উপস্থিত হয় ঘটনাস্থলে।
অস্ত্র বহনকারী পাঠাওয়ের রাইডারগ্রেফতার শওকত পাঠাও রাইডার। তিনি আরেকজনকে (পলাতক) খুব সকালে মিরপুর থেকে গেন্ডারিয়ায় নিয়ে আসে তবে অ্যাপস ব্যবহার না করেই। তিনি কন্ট্রাকে আসছেন বলে দাবি করেছেন। তার তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। গ্রেফতারদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
জেইউ/জেএইচ/এমএস