সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেধরা নিয়ে যে ভীতি জেলাবাসীর মনে সৃষ্টি হয়েছে তা মন থেকে ঝেড়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন নেত্রকোণার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী। তিনি বলেন, শিশু সজীবের দেহ বিচ্ছিন্ন মাথা কোনো অপরিচিত ব্যক্তির হাতে ছিল না। রবিন ছিল ওই শিশুরই প্রতিবেশী এবং এলাকার চিহ্নিত মাদকাসক্ত যুবক। যদি গণপিটুনি দিয়ে রবিনকে না মেরে ফেলা হতো তাহলে প্রকৃত ঘটনা পুলিশের মাধ্যমে অথবা সরাসরি তার মুখ থেকে দেশবাসী শুনতে পারত।
Advertisement
শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে নেত্রকোণার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসপি জয়দেব চৌধুরী এসব কথা বলেন।
এসপি বলেন, অপরিচিত হলেই সন্দেহ করে কাউকে মারা যাবে না। এ ধরনের ভুল সিদ্ধান্তে নিজেও অপরাধী বনে যেতে পারেন। তাই আগে তার পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হোন। তারপর কোথাও সমস্যা মনে হলে পুলিশে দিন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে মনের পুরনো কোনো জেদ বা বিকৃত মানসিকতা থেকেই সজীবের সঙ্গে নির্মম ও বর্বরোচিত এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ মাঠে আছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই মূল রহস্য উদঘাটন হবে।
Advertisement
এ সময় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এসএম আশরাফুল আলম, মো. শাহ্জাহান মিয়া (অপরাধ), মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল (সদর সার্কেল), মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাধারণ মানুষের মাধে যে বিভ্রান্তী বা ভীতি ছড়িয়েছে তা কাটিয়ে সকলের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহ্জাহান মিয়াসহ বিভিন্ন স্তরের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
পুলিশ কর্মকর্তা শাহ্জাহান জেলা পুলিশ ছাড়াও নিজের ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আশ্বস্ত করছেন।
তিনি জানান, শিশু সজিবের গলা কাটার বিষয়টি শুধুমাত্র একটি হত্যাকাণ্ড। এরসঙ্গে ছেলেধরা বা পদ্মা সেতু গুজবের কোনো সম্পর্ক নেই।
Advertisement
এরআগে বৃহস্পতিবার শহরের পূর্ব কাটলি এলাকার রঈছ উদ্দিনের ছেলে সজিবের (৭) দেহ বিচ্ছিন্ন মরদেহ প্রতিবেশী মাদকাসক্ত যুবক রবিনের (২৮) কাছ থেকে উদ্ধার হয়। পরে এ ঘটনায় একই এলাকার বাসিন্দা এখলাছের ছেলে রবিনকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর পূর্ব কাটলি এলাকার কায়কোবাদ নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে শিশু সজীবের মস্তক বিচ্ছিন্ন দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শিশু ও যুবকের মরদেহগুলো নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
কামাল হোসাইন/এফএ/এমকেএইচ