চলতি মাসে আইসিসির কয়েক দফার সভার পর নেয়া সিদ্ধান্তে আইসিসির বৈশ্বিক আয়োজন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে। এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা।
Advertisement
কারণ বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকলে হয়তো আর কখনোই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হবে না জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারদের। যা তাদের ঠেলে দেবে জোরপূর্বক অবসরের দিকে। আর এটি একদমই মানতে রাজি নন দলটির অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে আবেগপূর্ণ এক বার্তায় তিনি লিখেন, ‘কিভাবে একটি সিদ্ধান্ত একটি দলকে অপরিচিত করে দেয়, কিভাবে একটি সিদ্ধান্ত অনেক মানুষ বেকার করে দেয়, কিভাবে একটি সিদ্ধান্ত অনেক পরিবারের ওপর প্রভাব ফেলে, কিভাবে এক সিদ্ধান্ত অসংখ্য ক্যারিয়ার থামিয়ে দেয়! অবশ্যই আমি এভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চাইনি, আইসিসি।’
মূলত আইসিসির গঠনতন্ত্রের ২.৪ (গ) এবং (ঘ) এর আইন অমান্য করার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার আগে কথা বলা হয়েছে জিম্বাবুয়ের অন্তর্বর্তীকালীন ক্রিকেট বোর্ড ও সরকারের সঙ্গে। ক্রিকেট বোর্ডে সরাসরি সরকার হস্তক্ষেপ একদমই মেনে নেয়নি আইসিসি।
Advertisement
জিম্বাবুয়েকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর বলেন, ‘আমরা কোনো সদস্য দেশকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অনেকবার ভাবি। কিন্তু খেলাধুলাকে রাজনৈতিক সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতেই হবে। জিম্বাবুয়েতে যা হয়েছে তা আমাদের গঠনতন্ত্রের বিরোধী এবং আমরা এটিকে এমনিতেই ছেড়ে দিতে পারি না।’
তবে বহিষ্কারাদেশের মাধ্যমেই সব শেষ হয়ে যায়নি। আগামী তিন মাসের মধ্যে আইসিসিকে সন্তোষজনক খবর দিতে পারলে পুনরায় সদস্যপদ ফিরে পাবে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট। অন্যথায় আগামী অক্টোবরের সভায় বড় কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে তারা।
এদিকে এ নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে নারী দলের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব এবং অক্টোবরে পুরুষ দলের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলা শঙ্কার মুখে পড়ে গেছে। যা খেলতে না পারলে সামনের দিনগুলোতে বেশ বড়সড় ভোগান্তি মুখেই পড়তে হবে তাদের।
এ কথা মাথায় রয়েছে রাজারও। তাই তো ক্রিকইনফোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে না পারি তাহলে হয়তো বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজটিও খেলতে পারবো না। যদি ক্রিকেট বোর্ড না শোধরায়? আইসিসি কি আগের কমিটিকে দায়িত্ব দেবে? তারা কী চাচ্ছে?’
Advertisement
এসময় অনেকটা রাগে-ক্ষোভে রাজা আরও বলেন, ‘আমি জানি না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে আমরা এখন কোথায় যাবো, কী করবো? এটা কি ক্লাব ক্রিকেট নাকি কোনো ক্রিকেটই না আমাদের জন্য? আমরা কি এখন আমাদের খেলার সরঞ্জামগুলো পুড়িয়ে দিয়ে চাকরি খোঁজা শুরু করবো? আমি সত্যিই জানি না এখন আমাদের কী করা উচিৎ।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমার এখন এতটুকুই বলার আছে যে, আসলে আমার বলার কিছুই নেই। আমাদের ক্রিকেট, আমাদের জীবিকার মাধ্যম কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমি এখন যাই বলি না কেন, তা অনর্থক। এটা বধিরকে গান শোনানোর মতো। আমি ভাবতাম তাদের লক্ষ্য হলো খেলাটাকে ছড়িয়ে দেয়া কিন্তু ব্যাপার পুরোটা উল্টো।’
এসএএস/এমকেএইচ